ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় নিরাপত্তা ভঙ্গের পর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতে শাস্তির মুখে পড়েছেন বিরোধী সংসদ সদস্যরা। সবমিলিয়ে ১৫ জন সংসদ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
সংসদে অসাংবিধানিক আচরণ এবং সভার কাজে বাধা দেয়ার জন্য স্পিকার বৃহস্পতিবার তাদের এই শাস্তি দিয়েছেন বলে দেশটির একাধিক সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে।
লোকসভা থেকে বরখাস্ত হওয়া সদস্যরা হলেন কেরলের ইডুক্কী কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস সংসদ সদস্য ডিন কুরিয়াকোস, এরনাকুলামের সংসদ সদস্য হিবী ইডেন, আলাথুরের সংসদ সদস্য রম্যা হরিদাস, ত্রিশূরের টিএন প্রতাপন এবং তামিলনাড়ুর কারুর কেন্দ্রের সংসদ সদস্য জোথিমনী।
এ ছাড়া তামিলনাড়ুর বিরুধুনগরের সংসদ সদস্য মণিকাঞ্চন ঠাকুর, তুতুকুড়ির ডিএমকে সংসদ সদস্য কনিমোঝি করুণানিধিও শাস্তির তালিকায় আছেন।
লোকসভা থেকে বরখাস্ত হওয়া সংসদ সদস্যদের মধ্যে কংগ্রেসের ৯ জন, সিপিএমের দুজন, ডিএমকের দুজন এবং সিপিআইয়ের একজন রয়েছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবারই রাজ্যসভা থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে তৃণমূল সংসদ সদস্য ডেরেক ও’ব্রায়েনকে। তার বিরুদ্ধেও ‘অসংসদীয় আচরণের’ অভিযোগ রয়েছে। তৃণমূলের বক্তব্য, ডেরেক বুধবারের নিরাপত্তাভঙ্গের বিষয়ে রাজ্যসভায় আলোচনা দাবি করেছিলেন।
বৃহস্পতিবার লোকসভা এবং রাজ্যসভাতে সংসদ সদস্যদের নিরাপত্তার প্রশ্নে সরব হন বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সদস্যরা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিবৃতি দাবি করে ওয়েলে নেমে স্লোগান তোলেন তারা। শাহের পদত্যাগও দাবি করা হয়।
লোকসভার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে বুধবার গ্যালারি থেকে চেম্বারে ঢুকে পড়েন দুই যুবক। তাদের সঙ্গে ছিল রংবোমা। হলুদ রঙের ধোঁয়া তারা সভাকক্ষের চারদিকে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। দুজনকেই ধরে ফেলেন সংসদ সদস্যরা। তার পর তাতুলে দেয়া হয় নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে। সংসদের বাইরে থেকে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
কীভাবে নতুন সংসদ ভবনের আঁটসাঁট নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে লোকসভার কক্ষে ঢুকল রংবোমা? সেই প্রশ্নে তোলপাড় গোটা দেশ। বৃহস্পতিবার ওই ঘটনার বিষয়ে আলোচনাতেও উত্তপ্ত হয়ে পড়ে সংসদের উভয়কক্ষ।
হট্টগোলের মাঝে লোকসভার অধিবেশন বিকেল ৩টা পর্যন্ত মুলতুবি করা হয়। বুধবারের ঘটনার পর সংসদের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে।