ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ১২২ বছরে সর্বোচ্চ বৃষ্টি

বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগর থেকে প্রচুর আর্দ্রতা পূর্ব হিমালয়ে আঘাত হেনেছে। এতে ভারতের মেঘালয় ও আসামের কিছু অংশে অত্যন্ত ভারী বৃষ্টির সৃষ্টি হয়েছে। মেঘালয়ের পূর্ব খাসি পার্বত্য জেলার চেরাপুঞ্জিতে গত ১২২ বছরের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ পরিমাণ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, চেরাপুঞ্জিতে শুক্রবার (১৭ জুন) দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় ৯৭ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এই অঞ্চলে সবশেষ ১৯৯৫ সালের ১৬ জুন সর্বোচ্চ ১৫৬ দশমিক ৩ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল। এছাড়া মাওসিনরামের ৭১ সেমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা গত ২৪ ঘন্টার মধ্যে পঞ্চম সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। এই অঞ্চলে ১৯৯৬ সালের ৭ জুন সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ৯৪ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার রেকর্ড করা হয়েছিল।

আবহাওয়াবিদ আর কে জেনমনি বলেন, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমী বাতাস গত সপ্তাহ ধরে পূর্ব হিমালয়ে আঘাত হানছে। আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর পরিমাণে আর্দ্রতা ওই অঞ্চলে নেমে আসছে। এখানে অরোগ্রাফি (পর্বতের শীর্ষে মেঘ জড়ো হয়ে থাকা) আছে, যা এত বৃষ্টির কারণ হতে পারে। সেখানে খুব শক্তিশালী বাতাসও রয়েছে।

জেনমনি আরো বলেন, আগামী দুই থেকে তিন দিন অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। কিন্তু আমি মনে করি এখানে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের সময় শেষ হয়ে গেছে। আমরা আশঙ্কা করছি, ২১ জুন থেকে বৃষ্টিপাতের কার্যকলাপ বিহার, পশ্চিমবঙ্গজুড়ে পূর্ব দিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি) বলছে, শুক্রবার থেকে সোমবার পর্যন্ত উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে বজ্রপাতের সঙ্গে ভারী থেকে খুব ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। এরপর বৃষ্টির তীব্রতা কমবে বলে আশা করা হচ্ছে। বৃষ্টিপাত পশ্চিমবঙ্গের অবশিষ্ট অংশ ও বিহারের কিছু অংশে অগ্রসর হচ্ছে। বর্ষার উত্তর সীমা এখন পোরবন্দর, ভাবনগর, খান্ডওয়া, গোন্দিয়া, দুর্গ, ভবানীপাটনা ও কলিঙ্গাপত্তনমের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

আইএমডি জানিয়েছে, আগামী তিন দিনের মধ্যে মধ্যপ্রদেশ, বিদর্ভের অবশিষ্ট অংশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, পশ্চিম মধ্য ও উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর, ছত্তিশগড় ও ওড়িশার কিছু অংশ, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড এবং বিহারে বৃষ্টিপাত আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

স্কাইমেট ওয়েদারের ভাইস প্রেসিডেন্ট (জলবায়ু পরিবর্তন ও আবহাওয়া) মহেশ পালাওয়াত বলেন, উত্তর-পূর্বে তীব্র বর্ষা ছাড়াও রেকর্ড-ব্রেকিং বৃষ্টির অন্যান্য কারণ রয়েছে। উত্তর সমভূমি থেকে নাগাল্যান্ড পর্যন্ত বিস্তৃত একটি খাদ রয়েছে। বঙ্গোপসাগর থেকে ওই এলাকায় প্রচুর আর্দ্রতা রয়েছে। ওয়েস্টার্ন ডিস্টার্বেন্সের অবশিষ্টাংশ আসাম ও মেঘালয়েও পৌঁছে যাচ্ছে। মণিপুর, ত্রিপুরা ও মিজোরামের মতো উত্তর-পূর্ব ভারতের দক্ষিণাঞ্চলে আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে এমন বাধা সেখানে নেই, তাই সেখানে খুব ভারী বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়নি।