ভারত সরকারের অর্থায়নে প্রশস্ত হচ্ছে চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ বারৈয়ারহাট-হেঁয়াকো-রামগড় সড়ক।
বুধবার (২৪ মে) রাজধানীর তেজগাঁও সড়ক ভবনের চিফ ইঞ্জিনিয়ার কনফারেন্স হলে ‘বারৈয়ারহাট-হেঁয়াকো-রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণ’ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার শ্রী প্রণয় ভার্মা, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ.বি.এম. আমিন উল্লাহ নূরী বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
প্রকল্পটি ভারত সরকার কর্তৃক বাংলাদেশ সরকারকে প্রদত্ত ৪.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তৃতীয় কনসেশনাল লাইন অব ক্রেডিট-এর আওতায় গৃহীত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারত যদি বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ইনভেস্টমেন্ট করে তাহলে আমাদের অন্য কারো কাছে যেতে হয় না ইনভেস্টমেন্টের জন্য। আমাদের রোড কানেক্টিভিটি এবং রেল সেক্টরে দুই দিক থেকেই কানেক্টিভিটি অনেক দূর এগিয়ে গেছে। পাশাপাশি আরও নতুন নতুন দুয়ার উন্মোচিত হচ্ছে।
ভারতের সঙ্গে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য বেড়েছে এবং লেনদেন বেড়েছে। এরফলে উভয় দেশই লাভবান হয়েছে। এই কথাগুলো আমাদের আজকে স্বীকার করতে হবে। আমি ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই আমাদের নিজেদের স্বার্থে, আমাদের জাতীয় স্বার্থে এবং আমাদের উন্নয়নের স্বার্থে।
হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা অনুষ্ঠানে তাঁর বক্তব্যে গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ অবকাঠামো নির্মাণে ভারত সরকার ও বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অগ্রাধিকারের কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সাম্প্রতিক সময়ে সকল ক্ষেত্রেই নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে এবং বাংলাদেশ মূল্যমান ও প্রকল্পের সংখ্যা উভয় দিক থেকেই ভারতের বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার, যাকে রেয়াতি অর্থায়নের আওতায় প্রায় ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদান করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি মূল্যমানের চুক্তি হয়েছে এবং প্রদত্ত অর্থের পরিমাণ ২০২২ সালের মধ্যে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে।
তিনি প্রশংসা করে বলেন, অতিমারির সবচেয়ে সংকটপূর্ণ সময়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদারদের মধ্যে ভারত দ্রুততম ও বৃহত্তম প্রদানকারী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
ভারতীয় হাইকমিশনার সড়ক ও মহাসড়ক খাতের প্রকল্পসমূহের গুরুত্বের উপর জোর দেন, যেখানে রয়েছে ৯৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যমানের পাঁচটি প্রকল্প যা সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন মোট প্রতিশ্রুতির ১২%। উপরন্তু, ডাবল-ডেকার, সিঙ্গেল-ডেকার, এসি ও নন-এসি বাস এবং হেভি-ডিউটি ট্রাক সরবরাহের জন্য ৯১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যমানের তিনটি সরবরাহ প্রকল্প ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে, যার ফলে সড়ক ও মহাসড়ক খাতে ভারতের মোট প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করেছে।
বারইয়েরহাট-হেঁয়াকো-রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প, ভারত সরকারের লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় মোট ৮০.৮৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে, খাগড়াছড়ি জেলার অন্তর্গত রামগড় উপজেলার বারইয়েরহাট-হেঁকো-রামগড় সড়কের প্রায় ৩৮ কিলোমিটার অংশ প্রশস্তকরণের পরিকল্পনা করছে যা চট্টগ্রাম বন্দর ও রামগড় স্থলবন্দরের মধ্যে সড়ক নেটওয়ার্কের উন্নতিতে অবদান রাখবে। উপরন্তু, ভারত সরকারের অর্থায়নে ফেনী নদীর উপর ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু ইতোমধ্যে নির্মিত হয়েছে, এই সড়ক প্রকল্পটি সাব্রুম-রামগড় এলসিএস-এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিমুখী বাণিজ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশের আঞ্চলিক বাণিজ্য বৃদ্ধি করবে।