ব্লগার রাজীব হায়দার হত্যার ১০ বছর আজ

ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যাকাণ্ডের ১০ বছর পূর্ণ হলো আজ বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি)। ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মিরপুর এলাকায় জঙ্গিরা চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে তাঁকে হত্যা করে। এরই মধ্যে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। বর্তমানে মামলাটি হাইকোর্টের আপিল বিভাগে রয়েছে বলে জানা গেছে।

রাজীব হায়দার পেশায় স্থপতি ছিলেন। রাজধানীর শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনে সোচ্চার ছিলেন তিনি। ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে তিনি বিভিন্ন লেখা লিখতেন। ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মিরপুরের কালশীতে নিজ বাসার কাছে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় মামলা হলে তদন্তে নামে পুলিশ।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি জসিমউদ্দিন রাহমানীর উগ্রবাদী শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত ছাত্র মিলে ওই হত্যাকাণ্ড ঘটান। রাজীব হত্যাকাণ্ডের পর গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী, ব্লগার, লেখক, প্রকাশকসহ আরো কয়েকজনের হত্যাকাণ্ডে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সম্পৃক্ততা পুলিশের তদন্তে উঠে আসে।

২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাজীব হত্যা মামলার রায়ে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র পলাতক রেদোয়ানুল আজাদ রানা ও ফয়সাল বিন নাঈম দীপের ফাঁসির রায় দেন ঢাকার একটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। আরো ছয়জনকে দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড। তাঁদের মধ্যে মাকসুদুল হাসান অনিক, এহসান রেজা রুম্মান, নাঈম ইরাদ ও নাফিজ ইমতিয়াজকে ১০ বছরের কারাদণ্ডের সঙ্গে জরিমানা করা হয়।

আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি মো. জসিমউদ্দিন রাহমানীকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং সাদমান ইয়াছির মাহমুদকে তিন বছরের কারাদণ্ডের সঙ্গে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। রাহমানীকে ওই সাজা দেওয়া হয় হত্যায় উসকানিদাতা হিসেবে। ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল হাইকোর্ট ওই শাস্তিই বহাল রাখেন। কারাদণ্ড পাওয়া আসামিদের শাস্তি বাড়াতে রাজীবের বাবা যে আবেদন করেছিলেন, তার পক্ষে কোনো আইনজীবী শুনানিতে না থাকায় তা খারিজ হয়ে যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মামলাটি বর্তমানে হাইকোর্টের আপিল বিভাগে রয়েছে।