ব্রিটেনে ধান চাষ করে প্রশংসায় ভাসছেন জগন্নাথপুরের আজম খান

বছরের অধিকাংশ সময় ঠান্ডা আর বরফের আবহাওয়া যেখানে বিরাজমান সেখানে ধান চাষাবাদ করা অসম্ভব। তবে এবার সকলকে থাক লাগিয়ে শীতল আবহাওয়ার দেশ ব্রিটেনের মাটিতে ধান চাষ করে এই অসম্ভবকে সম্ভব করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের সফল উদ্ভাবক ও উদ্যোক্তা আজম খান ও তার সহধর্মিণী সুলতানা চৌধুরী। ব্রিটেনে ধান চাষের অবাক করা সংবাদটি ইতিমধ্যে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে সংবাদের শিরোনাম হয়েছে।

এই দম্পতির বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের দড়ি কুচ্ছনপুর গ্রামে বাসিন্দা। মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ার উপজেলার বিশিষ্ট জিন বিজ্ঞানী আবেদ চৌধুরী একটি নতুন জাতের ধান উদ্ভাবন করেছেন। নতুন আবিষ্কৃত ‘পঞ্চব্রীহি‘ নামের এই ধানের মতোই নতুন জাতের ধান চাষ করে সাফল্যের মুখ দেখেন প্রবাসী উদ্যোক্তা আজম খান। ব্রিটেনের শীতল মাটিতে প্রথমবার আজম খান ও তার সহধর্মিণী সুলতানা চৌধুরী নতুন জাতের এই ধানের বীজ রুপন করে সফলতার মুখ দেখেন।

এ বিষয়ে আজম খান মুঠোফোনে জানান, আমাকে বিশ্ববিখ্যাত জিনবিজ্ঞানী আবেদ চৌধুরী নতুন জাতের এই ধান বীজ দিয়েছিলেন। ধানের বীজগুলো টবে আমি আমার সহধর্মিণীকে সাথে নিয়ে প্রথম বার ২০২৩ সালের সাত জুলাই ব্রিটেনের প্রতিকূল আবহাওয়ায় বীজ বপন করি, প্রায় তিন মাস নিবিড় পরিচর্যা করি এবং শীতল আবহাওয়া আসলে চারা ধান গুলো গ্রিন হাউজে সংরক্ষণে রাখি, শীতল আবহাওয়ায় ধানের চারা গুলো টিকে থাকার প্রায় সাত মাস পর চারা থেকে ধানের তুর আসে, এক পর্যায়ে একটি দুটি করে ধানের শিষ পাকতে শুরু করে, পাকা ধানের একটি ছরা কাটার পর অপর গুছিতে তুর আসে, আবার নীচ থেকেও ধানের শিষ গজিয়ে উঠে।

তিনি আরও বলেন, আশ্চর্যের বিষয় মাত্র একটি ধানের বীজ থেকে ৯৬টি ধানগাছ হয়েছে, তবে এই ধানের জাত ‘পঞ্চব্রীহি’ নয়, তবে এটি পঞ্চব্রীহির মতোই বছরে কয়েক বার ফলন দিবে। ব্রিটেনের শীতল আবহাওয়ায় এই ধানের চাষ করা সম্ভব হবে বলে আজম খান জানান। পঞ্চব্রীহি ধানের উদ্ভাবক জিনবিজ্ঞানী আবেদ চৌধুরী ধানের অঞ্চল সুনামগঞ্জের মানুষ সফল উদ্যোক্তা আজম খান এর ভূয়সী প্রশংসা করেন।

আবেদ চৌধুরী মুঠোফোনে জানান, বর্তমান বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে অনুকূল আবহাওয়া থাকায় ব্রিটেনের মাটিতেও ধান চাষাবাদ করা সম্ভব হবে এবং সারা বছর না হলেও নির্দিষ্ট মৌসুমে ধান চাষ হবে। এখন থেকে সিলেটিরা ব্রিটেনে খাদ্য উৎপাদন করবেন এটি ঐতিহাসিক একটি মুহূর্ত, সিলেটিরা বৃটেনকে এই টেকনোলজি দিয়েছে, একটি দুটি ধানের ক্ষণা থেকে একদিন লক্ষ লক্ষ টন ধান উৎপাদন হবে এবং ব্রিটেনের খাদ্য নিরাপত্তায় বিরাট ভূমিকা রাখবে।

নতুন এই জাতের ধানের বিষয়ে আবেদ চৌধুরী জানান, আজম খান যে ধান চাষ করেছেন এটি পঞ্চব্রিহি ধানের মতোই নতুন একটি জাত। এই ধান একবার রোপণ করলে আর মরবেনা জীবিত থাকবে এবং একবার কাটার পর আবার গুছা গজিয়ে ধানের ফলন দিবে।।