আজ সকাল থেকেই চট্টগ্রামের আকাশে মেঘ ছিল। টসের পর বৃষ্টিও হয়েছে মিনিট ত্রিশেক। এরপর খেলা শুরু হলেও রৌদ্রজ্জল আবহাওয়া ছিল না। বন্দর নগরীতে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ব্যাটিং করতে নেমে ঝড় তুলেছেন দুই ওপেনার লিটন দাস এবং রনি তালুকদার। তাদের গড়ে দেওয়া মজবুত ভীতের ওপর দাঁড়িয়ে ছড়ি ঘুরিয়েছেন সাকিব আল হাসান এবং তাওহিদ হৃদয়।
ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ১৭ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ২০২ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। যেখানে সর্বোচ্চ ৮৩ রান এসেছে লিটনের ব্যাট থেকে। তাছাড়া ৪৬ রান করেছেন রনি। আইরিশদের হয়ে ২৮ রানে ২ উইকেট শিকার করেছেন বেন হোয়াইট।
ভেজা উইকেটে বরাবরই পেসাররা বাড়তি সুবিধা পান। কিন্তু চট্টগ্রামে তার সিকি ভাগও নিতে পারলেন না আইরিশ পেসাররা। দুই দফা বৃষ্টির পর ম্যচ শুরু হলেও প্রথম ওভার থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার লিটন দাস এবং রনি তালুকদার। তাদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৩ ওভার ৩ বল খেলেই দলীয় অর্ধশতক পূর্ণ করে দল।
বিশেষ করে লিটন এদিন আইরিশ পেসারদের রীতিমতো কচু কাটা করছেন। ১৮ বলে স্পর্শ করেছেন ব্যক্তিগত হাফ সেঞ্চুরি। যা বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুততম। মোহাম্মদ আশরাফুলের ২০ বলে হাফ সেঞ্চুরির রেকর্ড ভেঙ্গে নতুন ইতিহাস গড়েছেন এদিন এই উইকেটকিপার ব্যাটার।
হাফ সেঞ্চুরির পর আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠেন লিটন। অপর প্রান্তে রনিও আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছেন। সবমিলিয়ে ৬ ওভার ১ বলে দলীয় শতক পূর্ণ করে টাইগাররা। এরপর তারা ওপেনিং জুটিতে রেকর্ড গড়েছেন। নাইম শেখ এবং সৌম্য সরকারের ১০২ রানের জুটিকে ছাড়িয়ে যান লিটন-রনি।
৪৪ রান করে রনি বিদায় নিলে ভাঙ্গে ১২৪ রানের উদ্বোধনী জুটি। দুর্দান্ত ব্যাটিং করা রনি শেষ পর্যন্ত সাজঘরে ফিরেছেন হাঁফ সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে। এই ওপেনারের বিদায় নিলেও একটুও কমেনি রানের গতি। উইকেটে এসে প্রথম বলেই চার মেরে রানে খাতা খুলেন সাকিব। এর ফলে ১০ ওভার শেষে ১ উইকেটে ১৩০ রান তুলে বাংলাদেশ।
লিটন এদিন শুধু দ্রুততম ফিফটির রেকর্ডই গড়েননি, ছাড়িয়ে গেছেন নিজের সর্বোচ্চ রানের ইনিংসকেও। টি-টোয়েন্টিতে এতদিন তার সেরা ইনিংসটি ছিল ৭৩ রানের। আজ সেটিকে ছাড়িয়ে গেছেন। তবে ৮৩ রানের বেশি করতে পারেননি এই উইকেটকিপার ব্যাটার। ১২তম ওভারের শেষ বলে বেন হোয়াইটের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েছেন তিনি। তার ৪১ বলের ইনিংসে ১০টি চারের পাশাপাশি ৩টি ছক্কার মার ছিল।
লিটনের বিদায়ের প্রভাব পড়ে রান রেটের ওপর। তিন নম্বরে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতে শট খেলতে কিছুটা হলেও ভোগেছেন সাকিব। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আক্রমণাত্মক হয়েছেন অধিনায়ক। অন্যদিকে ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পেয়ে চারে নামা তাওহিদ হৃদয় এদিন শুরু থেকেই সাবলীল ছিলেন। নিজের খেলা দ্বিতীয় বলেই ৮৩ মিটার লম্বা এক ছক্কা হাকিয়েছন এই তরুণ ব্যাটার।
হৃদয় ইনিংসের শেষ ওভারে সাজ ঘরে ফেরার আগে নামের পাশে যোগ করেছেন ২৪ রান। তার ১৩ বলের ইনিংসে এক ছক্কার পাশাপাশি ৩টি চারের মার ছিল। আর সাকিব অপরাজিত থেকেছেন ২৪ বলে ৩৮ রান করে। তাদের এমন দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ১৭ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ২০২ রানে থেমেছে বাংলাদেশ।