বৃষ্টি কম হওয়ায় উন্নতির দিকে সিলেটের বন্যা

ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত কম হওয়াতে কিছুটা কমছে সিলেটের নদ-নদীর পানি। আর পানি কমায় জেলার নিম্নাঞ্চল থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে এখনো চরম দুর্ভোগে রয়েছে বন্যাকবলিত মানুষেরা।

শুক্রবার (৫জুলাই) রাতে সিলেটের জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের ১৩টি উপজেলার ৯৮টি ইউনিয়নের ১ হাজার ১৭৯টি গ্রামের ৬ লাখ ১ হাজার ৫৯৪ মানুষ বন্যাকবলিত রয়েছেন। এবং ৯ হাজার ৪১৩ মানুষ এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন ।

সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২১ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টিসহ সিলেট এলাকার বেশির ভাগ জায়গায় মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে বলে জানিয়েছেন ,সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, সিলেটের কুশিয়ারা নদীর তিনটি পয়েন্ট ও সুরমা নদীর একটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।আর বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টের পানি। শনিবার (৬জুলাই) দুপুর ১২টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারা নদীর অমলশীদ, শেওলা, ফেঞ্চুগঞ্জ, পয়েন্টে যথাক্রমে ১০৯, ২৯, ৯৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন বাধঁ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। নৌকা না থাকায় মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বিড়ম্বনায় পড়ে। পানিতে ডুবেছে ছয়টি আশ্রয়কেন্দ্র। উপজেলার চারটি এলাকা দিয়ে কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙে বানের পানি লোকালয়ে ঢুকে ভেসে গেছে বিপুলসংখ্যক পুকুর ও ফিশারির মাছ। সেই সাথে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জকিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, জকিগঞ্জ-সিলেট ও শেওলা-জকিগঞ্জ সড়কের একটি অংশ তলিয়ে গেছে।

জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফসানা তাসলিম বলেন, পানি কিছুটা কমায় জকিগঞ্জে বর্তমানে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে। লোকালয় থেকে পানি নামছে। তবে এখনো লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ৫৮ টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা আছে । এরমধ্যে ৮ টি তে মানুষ আছেন । শুকনো খাবারের পাশাপাশি পানিবন্দিদের রান্না করা খাবারও বিতরণ করা হচ্ছে।