বিয়ানীবাজারে হাওরে ভাসলো যুবকের লাশ, অভিযুক্ত পুলিশ

সিলেটের বিয়ানীবাজারের তিলপাড়া ইউনিয়নের পীরেরচক এলাকার দুলাল আহমদ নামের এক যুবককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।

রোববার (২৯ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এলাকার কদম আনি বিলে যুবকের লাশ ভেসে উঠলে এলাকার শত শত মানুষ ঘটনাস্থলে জড়ো হন এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

দুলাল আহমদ (৪০) পীরেরচক এলাকার মৃত গিয়াস উদ্দিনের বড় পুত্র। তিনি প্রথম স্ত্রীর করা একটি মামলায় পলাতক আসামি ছিলেন।

লাশ ভেসে ওঠার খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান খান ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীকে নিয়ন্ত্রণ করেন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দুলাল আহমদ গতকাল শনিবার বিকেলে স্থানীয় কুশিটিকি সেতুর উত্তর হাওরে নৌকা বাইচ দেখতে গিয়েছিলেন। নৌকা বাইচ শুরু হওয়ার পূর্বে সাদা পোশাকের একদল পুলিশ দুলালের পাশে দাঁড়ানো যুবককে নাম জিজ্ঞেস করতেই দুলাল আহমদ দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে তিনি হাওরের পানিতে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতার কাটতে থাকলে পুলিশ সদস্যরা প্রথমে দৌড়ে এবং পরে একটি নৌকায় করে তার পিছু নেন। এরপর থেকে দুলাল নিখোঁজ ছিলেন।

রোববার সকালে গ্রামের লোকজন কদম আনি বিলে মাছ শিকারে গেলে দুলাল আহমদের ভেসে ওঠা লাশ দেখতে পান। প্রত্যেক্ষদর্শীরা দুলাল আহমদের বাড়িতে খবর দেন। এ ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে শত শত এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের অভিযোগ, পুলিশ যে নৌকায় করে তার পিছু নিয়েছিল সে নৌকার লগিসহ হাতে থাকা বাঁশ দিয়ে আঘাত করায় দুলাল পানিতে ডুবে মারা যান।

এদিকে, বিয়ানীবাজার থানার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ভাসমান লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত বিয়ানীবাজার থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এএসআই) জসিম উদ্দিনের মোবাইল নম্বর বন্ধ থাকায় অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিল্লোল রায় বলেন, পুলিশ ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে অভিযানে গেলে আসামি পালিয়ে যেতে পানিতে ঝাঁপ দিয়েছিল। রোববার এলাকাবাসীর কাছে থেকে খবর পেয়ে হাওর থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব বলেন, দুলাল আহমদকে হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগ নিয়ে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে উত্তেজিত ছিলেন। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বিক্ষুব্ধ মানুষকে আশ্বস্ত করেছি।

তিনি বলেন, সিলেটের পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসবেন বলে আমাকে জানিয়েছেন। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে জানা যাবে তিনি কিভাবে মারা গেছেন।