বিয়ানীবাজারে ‘ব্লু হোয়েল’ গেম খেলে স্কুলছাত্রের আত্মহত্যা

সুইসাইডাল গেম হিসেবে আলোচিল ‘ব্লু হোয়েল’ অনলাইন গেম। কিছুদিন পূর্বেও এই গেম খেলে মৃত্যুর ঘটনা পত্রিকার পাতায় খবর হিসেবে উঠে আসলেও এ নিয়ে বিতর্কের শেষ ছিল না। এই গেমটির ভয়াবহ রোধে সরকার বাংলাদেশে এর কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। কিন্তু এরপরও রোববার সন্ধ্যায় সিলেটের বিয়ানীবাজারে ১৩ বছরের এক স্কুলছাত্র ব্লু হোয়েল গেম খেলতে গিয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

আত্মহননকারী ছেলের নাম আহমদ আল আভি (১৪)। সে পৌরসভার শ্রীধরা গ্রামের বাসিন্দা ও বিয়ানীবাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য নোমান আহমদের একমাত্র ছেলে। আভি বিয়ানীবাজার খলিল চৌধুরী আদর্শ বিদ্যানিকেতনের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।

স্থানীয়রা জানান, মৃতদেহের পাশেই একটি সচল স্মার্ট ট্যাবলয়েড সচল অবস্থায় রাখা ছিল। তাদের ধারণা, এ সময় ‘ব্লু হোয়েল’ গেমটি খোলা ছিল এবং আভি গেমের শেষ ধাপে ছিল, এই পর্যায়ে তাকে আত্মহত্যার নির্দেশ দিয়েছিল মডারেটর। আত্মহত্যার পূর্বে সে মেয়েদের কাপড়চোপড় পরে বুকের মধ্যে ‘৩০২’ নম্বর প্লেটের একটি স্টিকার সেটে দিয়েছিল। তাছাড়া ওই স্কুল ছাত্রের পরনে ছিলো তার বড় বোনের পায়জামা, কামিজ ও ওড়না। আর লাশটি ঝুলন্ত অবস্থায় ওড়না দিয়ে মুখ ঢাকা ছিল।

পবিরারসূত্রে জানা যায়, বেশ কয়েকদিন থেকে স্কুল ছাত্র আহমদ আল আভি বিভিন্ন ধরনের অনলাইন ভিত্তিক গেম খেলতো। কারো কোন বারণ মানতো না। তবে সে যে ব্লু হোয়েল খেলতো সেটা পরিবারের কারো জানা ছিল না।

জানা যায়, রোববার বিকালে আভির পরিবারের সবাই আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। সেসময় আভি একাই বাড়িতে ছিল। সন্ধ্যার এক পর্যায়ে সে ঘরের দরজা বন্ধ করে গেম খেলতে বসে। এরপর কেটে যায় বেশ কয়েক ঘণ্টা। পরিবারের সদস্যরা বাড়ি ফিরে অনেক ডাকাডাকি করেও তার কোন সাড়া না পেয়ে চিৎকার শুরু করেন। পরে প্রতিবেশিরা চিৎকার শুনে ছুটে এসে দরজা ভেঙে দেখেন, ছেলেটি দড়ির সাথে ঝুলছে। পরে স্থানীয় থানা পুলিশকে অবগত করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশটি উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।

থানা পুলিশ জানিয়েছে, আহমদ আল আভির মৃত্যুর জন্য ব্লু হোয়েল মোবাইল গেমটিই দায়ী। মোবাইল ফোনটির কল রেকর্ড ও অন্য সকল তথ্য পরীক্ষা করতে আইটি বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠানো হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।

বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিল্লোল রায় বলেন, গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার বিষয়টি ষ্পষ্ট। তবে কি কারণে সে আত্মহনন করেছে সেটি ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসলে জানা যাবে। তিনি বলেন, গেম খেলার বিষয়টি আমরা জেনেছি। তার ব্যবহৃত স্মার্ট ট্যাবলয়েডটি আমরা জব্দ করেছি। বর্তমানে বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।