টানা দুই ম্যাচ জয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ নিশ্চিত করা বাংলাদেশ তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামে মঙ্গলবার (১৪ মার্চ)। মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হয়েছে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায়। ম্যাচে ইংলিশদের ১৬ রানে হারিয়ে যে কোনো সংস্করণে প্রথম ‘বাংলাওয়াশের’ স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ।
ম্যাচে টস জিতে বাংলাদেশকে প্রথমে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার। দুই ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদার বেশ চমৎকার গুছিয়ে খেলতে শুরু করেন। পাওয়ার প্লে-তে স্কোরবোর্ডে তারা রান তোলেন বিনা উইকেটে ৪৬।
তবে দলীয় রান ফিফটি পার হতেই আদিল রশিদের রিভার্স সুইং খেলতে গিয়ে ধরা পড়েন রনি। ইনিংসের ৭.৩ ওভারে রনিকে আউট করে আদিল তার প্রথম উইকেট তুলে নেন। আউট হওয়ার আগে রনির ব্যাট থেকে আসে ২২ বলে ২৪ রান। অপরপ্রান্তে ৩৩ বলে অপরাজিত ৩৯ রান নিয়ে ছিলেন লিটন কুমার। তাকে সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
ইনিংসের ১৩ ওভারে রেহান আহমেদের করা বল ঠেলে ১ রান নিয়ে লিটন দাস পূরণ করে ফেলেন ফিফটি। এই ২৮ বছর বয়সী শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দাপট দেখিয়েই ফিফটি রান তুলেছেন। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৭৩ রান। টি-টোয়েন্টিতে এটাই লিটনের সর্বোচ্চ রানের স্কোর। এর আগে ইংলিশদের বিপক্ষে দুই সিরিজে টানা পাঁচ ম্যাচই ছিলেন ব্যর্থ। ক্রিস জর্ডানের বলে ফিল সল্টকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।
লিটনের আউটের পর মাঠে নামেন দলীয় অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তবে তিনি নাজমুল শান্তকে সঙ্গই দেন কেবল। শান্তর ব্যাট থেকে আসে ৩৬ বলে অপরাজিত ৪৭ রান। ফিফটি করার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি সাম্প্রতিক সময়ে ধারাবাহিক পারফর্ম করা এই ওপেনার। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকেই মাঠ ছাড়েন তিনি। সাকিবের ব্যাট থেকে আসে ৪ রান।
বাংলাদেশের ইনিংস থামে ১৫৮ রানে। বাংলাদেশের ১৫৮ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট খুইয়ে বসে ইংল্যান্ড। দুই ওপেনার ডেভিড মালান ও ফিল সল্ট রানের খাতা খুলতে না খুলতেই তানভীর ইসলাম উইকেট তুলে নেন। প্রথম ওভারের ৩ নম্বর বলে সল্টের ভুলে লিটন দাস স্ট্যাম্প করেন। ব্যাটারের ভুল হলেও লিটন দ্রুত বল স্ট্যাম্পে লাগাতে ভুল করেননি। দলীয় মাত্র ৫ রানেই পতন ঘটে ইংলিশদের প্রথম উইকেটের।
তানভীরের আন্তর্জাতিকে এটাই অভিষেক ম্যাচ। প্রথম ম্যাচের প্রথম ওভারেই তিনি আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ঝুলিতে ভরে নিলেন প্রথম উইকেট। প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতে একাদশে সুযোগ না পেলেও শেষ ম্যাচে ডাক পেলেন, নিজের সামর্থ্যের প্রমাণও রাখলেন এই ২৬ বছর বয়সী স্পিনার।
তবে এরপর দেখে-শুনে ব্যাট করতে থাকে ডেভিড মালান ও জস বাটলার। তবে এবার পরপর দুই উইকেট হারায় ইংলিশরা। দলীয় ১০০ রানে মালান মোস্তাফিজুর রহমানের বলে লিটন দাসকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। এই উইকেটের মাধ্যমে টি-টোয়েন্টিতে ১০০ উইকেট পূর্ণ করলেন কাটার মাস্টার।
প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে মালানের ব্যাট থেকে আসে ৫৩ রান। পরের বলে একই রানে ফেরেন বাটলারও। তবে এবার দুর্ভাগ্য অধিনায়কের। মেহেদী হাসান মিরাজের সরাসরি থ্রোতে রানআউট হন তিনি। ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৪০ রান।
টানা দুই বলে দুই উইকেট হারিয়ে খানিক চাপেই ছিল সফরকারীরা। চাপের ভেতরই দলীয় ১১৯ রানে তাসকিনের বলে মঈন আলি মিরাজকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন।
আর মাত্র ৪ রান যোগ হতেই বেন ডাকেটও মঈনের পথ ধরেন। তিনিও ফেরেন তাসকিনের বলে। আর মাত্র ৫ রান স্কোরবোর্ডে যোগ হতেই সাকিব আল হাসানের বলে উইকেট বিলিয়ে দেন স্যাম কুরান।
শেষ ওভারে প্রথম দুই বলে হাসান মাহমুদকে পরপর চার মারেন ক্রিস ওকস। তবে পরের চার বল দেখে-শুনে বল করেন এই তরুণ তারকা। তৃতীয় ও চতুর্থ বলে ১ রান করে দেন। শেষ দুই বলে হাসান তার বল থেকে কোনো রান ই আদায় করতে দেননি।
নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ইংলিশদের ইনিংস থামে ১৪২ রানে। বাংলাদেশ জয় পায় ১৬ রানে। এর ফলে তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জয় পেয়েছে সাকিবের নেতৃত্বাধীন দলটি। এবারই প্রথম কোনো সংস্করণে টাইগারদের কাছে `বাংলাওয়াশ` হয়েছে ইংলিশরা।