বিশ্বনাথে সাবেক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের অভিযোগ, সংবাদ সম্মেলন

বিশ্বনাথ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজুল হকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, মিথ্যা অপবাদ ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন অধ্যক্ষের ভাতিজা, গোয়ালগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মনিরুজামান মনির।

বৃহস্পতিবার (২৫ মে) বিশ্বনাথ প্রেসক্লাব ক্লাব কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

লিখিত বক্তব্যে মনিরুজামান মনির বলেছেন, চৌধুরীগাঁও গ্রামের মৃত মরম আলীর পুত্র ধর্ষণ মামলার আসামী আবুল কাহার এর ছোট ভাই জাহিদ গত ২০ মে সংবাদ সম্মেলন করে আমার চাচা বিশ্বনাথ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজুল হক ও আমি মনিরুজামান মনিরকে জড়িয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ, অসত্য তথ্য পরিবেশন করে সংবাদ সম্মেলনের করেছে। যাহা অত্যান্ত নিন্দনীয়, মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্য প্রনোদিত। সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করতে তারা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে।

মনিরুজামান মনিরের লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, ২০১৯ সালে ‘বিশ্বনাথে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ুয়া শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ শিরোনামে’ আবুল কাহারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় একাধিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। বর্তমানে ধর্ষণ মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছেন। মামলায় আবুল কাহার ৭ মাস কারাবরণও করেছেন। এসবের মধ্য দিয়েও সিরাজুল হককে জড়িয়ে বলা হয়েছে আমাদের পরামর্শে আম্বিয়া বেগম মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে একাধিক মামলা দিয়ে ও বারবার নারাজি দিয়ে আবুল কাহার ও তার পরিবারকে অন্যায়ভাবে হয়রানি করা হচ্ছে বলে দাবি করেন। যাহা সম্পন্ন মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত। তারা আমাদের মান সম্মান ক্ষুন্ন করতে এসব বলেছে। আমি, আমার চাচা ও আমাদের পরিবার কোন ধরনের তা বিশ্বনাথবাসি জানেন। আমার চাচা একজন সম্মানি মানুষ উনার বিরুদ্ধে এসব বলার পূর্বে অন্তত চিন্তা করার দরকার ছিল। আবুল কাহার ও জাহিদের এসব বানানো মিথ্যা কথার বিচার আমি প্রশাসন ও বিশ্বনাথবাসির কাছে দিলাম।

তিনি আরো বলেন, আমার চাচা বিশ্বনাথ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজুল হক একজন মানুষ গড়ার কারিগর, সফল ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক। তাঁর আদর্শে গড়া অনেক ছাত্র আজ দেশ-বিদেশে সাংবাদিকতা, শিক্ষকতাসহ বিভিন্ন পেশায় সুনামের সাথে নিয়োজিত আছেন।

তাঁর ছেলে-মেয়েরা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করছে। আজ ওই পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে আবুল কাহার ও জাহিদ। আমাদের পরিবারকে খাটো করতে এসব ষড়যন্ত্র করছে তারা। আমি আবুল কাহার ও জাহিদের এসব মিথ্যা অপপ্রচারের বিচার প্রশাসন ও বিশ্বনাথবাসির কাছে দিলাম।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ইউপি সদস্য মো. মছদ্দর আলী, যুক্তরাজ্য প্রবাসী মোজাম্মিল আলী, মুরব্বী আব্দুল মতিন, ইফতেখার হোসেন, সংগঠক এমদাদুল হক, শরিফ আহমদ প্রমুখ।

এর আগে গত শনিবার (২০ মে) বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে একই এলাকার চৌধুরীগাও গ্রামের মৃত হাজী মহরম আলীর ছোট ছেলে মো. আব্দুল জাহিদ। লিখিত বক্তব্যে বলেন, বিগত উপজেলা নির্বাচনে নৌকার এজেন্ট থাকা অবস্থায় বাকবিতন্ডা হয় বিএনপি সমর্থক ও বিশ্বনাথ কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজুল হকের ভাতিজা মনিরুজ্জামান মনিরের সঙ্গে।

এ ঘটনার জের ধরে নানাভাবে আমার ভাইকে ফাঁসাতে চেষ্ঠা করতে থাকেন তারা। কিছু দিন পর ২০১৯ সালের ২৬জুন চৌধুরী গাঁওয়ের যুক্তরাজ্য প্রবাসী হাজী শুকুর আলীর বাড়িতে থাকা ভাড়াটিয়া রিকশা চালক ইরান উদ্দিনের ১৪ বছর বয়সী কন্যা শিশুকে কে-বা কারা ধর্ষণ করে। এই ঘটনা আমার ভাই আব্দুল কাহার করেছেন বলে অধ্যক্ষ সিরাজুল হক জনৈক নাজমুল ইসলাম মকবুলকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানান। নাজমুল ইসলাম মকবুল সেসময় ‘প্রতিভার কথা’ নামক একটি ফেসবুক পেজে ‘বিষয়টি উদ্বেগজনক’ শিরোনামে লেখেন। এরপর কমেন্টে আমার ভাইকে ধর্ষণকারী হিসেবে নাম লেখা হয়। এই লেখালেখির সংবাদ থেকে ধর্ষণের ঘটনা সাজিয়ে ৩০জুন নির্যাতিতার মা আম্বিয়া বেগম (৪০) বাদী হয়ে আমার আব্দুল কাহারকে একমাত্র আসামি করে বিশ্বনাথ থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন, (মামলা নং ২৬/২০১৯)। পরদিন আমার ভাই আব্দুল কাহারকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

২০২০ সালে ২৯ জানুয়ারী এ মামলায় ডিএনএ টেস্টের রিপোর্টে কাহারের কোন সম্পৃক্ততা না থাকায় বিশ্বনাথ থানার এসআই রত্না বেগম আমার ভাইকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দিলে প্রায় সাড়ে ৭ মাস কারাবরণ করে বের হন তিনি। মনিরুজ্জামান মনিরের কুপরামর্শে আম্বিয়া বেগম মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে একাদিক মামলা দিয়ে ও বার বার নারাজি দিয়ে আমার ভাইকে ও আমার পরিবারকে অন্যায়ভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। বর্তমানে ২০২২ সনের ১৯ জুলাই মিথ্যা মারামারির মামলা দায়ের করেন, (সিআর মামলা নং ৪২২/২২ইং)। মামলাটি বাদীর বিরুদ্ধে ২১১ধারা মোতাবেক প্রসিকিউশন দিয়ে বিজ্ঞ আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার এসআই আমিরুল ইসলাম।

ওই মামলা উৎকোচ নিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি তদন্ত আব্দুস সালাম চলতি বছরের ৬ এপ্রিল আমাদের বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা চার্জশিট দাখিল করেন।

সিলেট ভয়েস/এএইচএম