বিশ্বনাথে প্রতিপক্ষের হামলার ঘটনায় মামলা, অভিযুক্ত ১৯ জন

বিশ্বনাথের দৌলতপুর (হাসনাজির) গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় মসজিদের ঈমাম ও নারীসহ ৭ জন আহত হওয়ার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এ ঘটয়ায় খুন করার উদ্দেশ্যে ও স্বর্ণালঙ্কার চুরির অভিযোগ এনে বিশ্বনাথ থানায় মামলাটি দায়ের করেন গ্রামের মৃত হাজী আব্দুল লতিফের পুত্র মোস্তফা মিয়া। মামলা নং ১৩ (তাং ১৯.০৪.২৩ইং)। মামলায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বাদী প্রতিপক্ষের লোকজন কিছু দিন পূর্ব হইতে বাদীর স্বত্ব দখলীয় ভূমি তার (বাদী) বাড়ির পূর্ব দিকে রাস্তার পাশের জমি জবর দখল করার পায়তারা করে আসছে বলেও অভিযোগ করেছেন।

জানা গেছে, গত ১৮ এপ্রিল বিশ্বনাথের দৌলতপুর (হাসনাজির) গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় মসজিদের ঈমাম ও নারীসহ ৭ জন আহত হন।

আহতরা হলেন- উত্তর দৌলতপুর গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের পুত্র মোস্তফা মিয়া, শফিক মিয়া, মৃত মোহাম্মদ সুলতান আলীর পুত্র নেছার আহমদ, মোস্তফা মিয়ার স্ত্রী রুকিয়া বেগম, পুত্র হাফিজ গোলাম কিবরিয়া ও জাকারিয়া, শফিক মিয়ার স্ত্রী গুলবাহার।

ঘটনার পরদিন ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেন গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের পুত্র মোস্তফা মিয়া। এতে প্রধান আসামি করা হয় ৫নং দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও মৃত ইমান আলীর পুত্র আনোয়ার হোসেন ধন মিয়া (৩০)। মামলার অন্যান্য অভিযুক্তরা হলেন- উত্তর দৌলতপুর গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর পুত্র আলা মিয়া (৪০), মৃত ছনুফর আলীর পুত্র কুতুব আলী (৩৫), আব্দুস ছত্তারের পুত্র শফিক মিয়া (৪০), আব্দুল মন্নানের পুত্র হোসন আলী (৩৫), মৃত ইমান আলীর পুত্র লাল মিয়া (৩৫), গজম্বর আলীর পুত্র কালা (৩৩), আব্দুর রশিদের পুত্র শায়েক মিয়া (৪০), আব্দুল বারিকের পুত্র আতাই (৪০), মৃত মবশ্বর আলীর পুত্র জমির (৫০), গজম্বর আলীর পুত্র ইরন মিয়া (৪৫), ইমান আলীর পুত্র কালা মিয়া (৩২), গজম্বর আলীর পুত্র কয়ছর (৪০), মৃত মোহাম্মদ আলীর পুত্র ছাদ মিয়া (৩২), আব্দুছ ছত্তারের পুত্র মাসুক মিয়া (৬০), আব্দুল বারিকের পুত্র আনহার (৩৩), চান্দ আলীর পুত্র ইশকার (৩৫), গজম্বর আলীর পুত্র খসরু মিয়া (৩৫), মৃত আফিজ আলীর পুত্র আজিজুল (৩০)।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, প্রতিপক্ষের লোকজন কিছু দিন পূর্ব হইতে বাদীর স্বত্ব দখলীয় ভূমি তার (বাদী) বাড়ির পূর্ব দিকে রাস্তার পাশের জমি জবর দখল করার পায়তারা করে আসছে।

এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে মামলার অভিযুক্তরা বাদীর স্বত্ব দখলীয় ভূমিতে এস্কেলেটর দিয়ে মাটি ভরাট করতে গেলে বাদী সেখানে উপস্থিত হয়ে অভিযুক্তদের বাঁধা-নিষেধ দিয়ে তারা (প্রতিপক্ষ) মাটি ভরাটের কাজ বন্ধ করে দেয়। এরপর বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বাদীর বাড়িতে অনাধিকার প্রবেশ করে বাদীসহ তার স্ত্রী-পুত্র, ভাই-ভাইয়ের স্ত্রীর উপর হামলা করে। প্রতিপক্ষের হামলায় বাদীসহ ৭ জন নারী-পুরুষ রক্তাক্ত জখমী হয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এসময় হামলাকারীরা বাদীর ভাই শফিক মিয়ার স্ত্রী গুলবাহারের গলায় থাকা ১ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন চুরি করে নিয়ে গেছে বলে এজাহারে উল্লেখ করেছেন বাদী।

এ ব্যাপারে মামলার প্রধান অভিযুক্ত উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার আনোয়ার হোসেন ধন মিয়ার সাথে সেলফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘তদন্ত সাপেক্ষে এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’