বিশ্বনাথে পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে প্রবাসী পরিবারকে হয়রানির অভিযোগ

ইনী বৈধতা ছাড়াই অর্ধশতাব্দীর প্রাচীন তিনটি গাছ কাটা ও প্রবাসী একটি পরিবারকে হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার (১৮ মে) সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন বিশ্বনাথ পৌরসভার জানাইয়া দক্ষিণ মসুলা গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী সামছুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সামছুল ইসলাম বলেন, ‘এলাকায় একটি মসজিদ নির্মাণের জন্য সম্প্রতি আমি দেশে এসেছি। কিন্তু দেশে এসে পড়েছি দুষ্টচক্রের কবলে। ওই চক্রটি আমার ও আমার পরিবারের সুনাম নষ্ট করতে উঠেপড়ে লেগেছে। ওই চক্রের কারণে পৌরশহরসহ শান্তির জনপদ বিশ্বনাথ ক্রমেই অশান্ত হয়ে উঠছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘রামপাশা রোড ও বিশ্বনাথ-হাবড়াবাজার-মিরেরচক সড়কের চৌমুহনীতে আমার বাবা সাজিদ উল্লাহর নামে আমাদের জমিতে একটি মার্কেট রয়েছে। মার্কেটের সামনে আমাদের খালি জায়গায় ছয়টি বিশাল আকারের রেন্ট্রি গাছ ছিল। চৌমুহনী হওয়ার কারণে যাতায়াতকারী মানুষের সুবিধার জন্য এই গাছগুলো খুবই উপকারী। যাত্রী ছাউনী না থাকায় গাছের ছায়ায় বসে যাত্রীরা বিশ্রাম নিতেন।’ সম্প্রতি অর্ধশতাব্দিকালের পুরনো এ ছয়টি রেন্ট্রি গাছের উপর চোখ পড়ে মেয়র মুহিবুর রহমানের। এর পরই উনার নির্দেশে অর্ধশতাব্দির প্রাচীন তিনটি রেন্ট্রিগাছ কেটে ফেলা হয় । রাস্তা সংস্কার কাজের নামে তিনি গাছগুলো কেটে ফেলতে আমাকে মৌখিক নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে আমি আমার জমির পাশের সরকারি রাস্তার ভুমি চিহিৃতকরণের জন্য ২৭ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর একটি আবেদন করি। কিন্তু ওই আবেদনের সুরাহা হওয়ার আগেই রবিবার (১৪ মে) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তিনজন শ্রমিক গিয়ে গাছ কাটা শুরু করে। এ অবস্থায় আমি শ্রমিকদের বাধা দেই এবং কার নির্দেশে গাছ কাটা হচ্ছে সে ব্যাপারে জিজ্ঞেস করি। এ সময় বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমানের নির্দেশে গাছ কাটা হচ্ছে বলে শ্রমিকরা জানায়। পরে বিষয়টি নিয়ে থানা পুলিশের দ্বারস্থ হলে তারা গাছ কাটায় নিয়োজিত শ্রমিক আটক করে।’

লিখিত বক্তব্যে সামছুল ইসলাম অঅরও বলেন, ‘বিশ্বনাথ পৌর এলাকার মানুষ স্বাধীনতার পর থেকে একটি পৌরসভার জন্য আন্দোলন করে আসছিলেন। অবশেষে পৌরসভা হয়েছে। প্রায় ছয় মাস আগে ভোটে মেয়র ও কাউন্সিলররা নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের হাতে বিশ্বনাথের উন্নয়নের দায়িত্বভার দিয়েছেন পৌরসভার লোকজন। কিন্তু মেয়র হিসেবে মুহিবুর রহমান কী প্রতিদান দিচ্ছেন তা বিশ্বনাথের মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। তিনি আইনের তোয়াক্কা না করে যা ইচ্ছা তাই করছেন। আর এর জ্বলন্ত প্রমান গাছ কাটার ওই ঘটনা।’ এলাকার মানুষের জন্য নিরলসভাবে আমি ও আমার পরিবার কাজ করছি। কিন্তু এখন নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে আমাকে ও আমার পরিবারকে। এতে একজন প্রবাসী হিসেবে আমি ভীত সন্ত্রস্ত। মেয়র মুহিবুর রহমানের ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রতিকার চাই। গাছ কাটার অপরাধে মেয়র মুহিবুর রহমানের বিরুদ্ধে আইনগত
ব্যবস্থা নেওয়ার দবি জানাচ্ছি।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তাজ উদ্দিন, জইনুর রহমান, আব্দুল হাই আবুল, বাবুল মিয়া, তহুর উদ্দিন, সফিক মিয়া, রফিক আলী, মুক্তার আলী প্রমুখ।

সিলেট ভয়েস/এএইচএম