বিশ্বনাথে ধর্ষণ মামলা দিয়ে কৃষক লীগ নেতাকে হয়রানী!

সিলেটের বিশ্বনাথে বিগত উপজেলা নির্বাচনে নৌকা মার্কার এজেন্ট হওয়ায় উপজেলা কৃষক লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাহার নামের এক যুবককে ধর্ষণ মামলাসহ একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানী করছে বিএনপির প্রভাবশালীরা।

এমন অভিযোগ এনে শনিবার দুপুরে বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীর ছোটভাই মো. আব্দুল জাহিদ। তিনি পৌর এলাকার চৌধুরীগাঁও গ্রামের মৃত হাজী মহরম আলীর ছেলে।

লিখিত বক্তব্যে আব্দুল জাহিদ বলেন, ‘বিগত উপজেলা নির্বাচনে নৌকার এজেন্ট থাকা অবস্থায় বাকবিতণ্ডা হয় বিএনপি সমর্থক ও বিশ্বনাথ কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজুল হকের ভাতিজা মনিরুজ্জামান মনিরের সঙ্গে। এ ঘটনার জের ধরে নানাভাবে আমার ভাইকে ফাঁসাতে চেষ্টা করতে থাকেন তারা। কিছু দিন পর ২০১৯ সালের ২৬জুন চৌধুরীগাঁওয়ের যুক্তরাজ্য প্রবাসি শুকুর আলীর বাড়িতে থাকা ভাড়াটিয়া রিকশা চালক ইরান উদ্দিনের ১৪বছর বয়সী কন্যা শিশুকে কে-বা কারা ধর্ষণ করে। এই ঘটনা আমার ভাই আব্দুল কাহার করেছেন বলে অধ্যক্ষ সিরাজুল হক জনৈক নাজমুল ইসলাম মকবুলকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানান। নাজমুল ইসলাম মকবুল সেসময় ‘প্রতিভার কথা’ নামক একটি ফেসবুক পেজে ‘বিষয়টি উদ্বেগজনক’ শিরোনামে লেখেন। এরপর কমেন্টে আমার ভাইকে ধর্ষণকারী হিসেবে নাম লেখা হয়। এই লেখালেখির সংবাদ থেকে ধর্ষণের ঘটনা সাজিয়ে ৩০জুন নির্যাতিতার মা আম্বিয়া বেগম (৪০) বাদী হয়ে আমার ভাই আব্দুল কাহারকে একমাত্র আসামি করে বিশ্বনাথ থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন, (মামলা নং ২৬/২০১৯)। পরদিন আমার ভাই আব্দুল কাহারকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।’

তিনি বলেন, ‘২০২০ সালে ২৯ জানুয়ারী এ মামলায় ডিএনএ টেস্টের রিপোর্টে কাহারের কোন সম্পৃক্ততা না থাকায় বিশ্বনাথ থানার এসআই রত্না বেগম আমার ভাইকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দিলে প্রায় সাড়ে ৭ মাস কারাবরণ করে বের হন তিনি। এরপর বাদীর বারবার নারাজির প্রেক্ষিতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে।’

আব্দুল জাহিদের অভিযোগ, অধ্যক্ষ সিরাজুল হক ও মনিরুজ্জামান মনিরের কুপরামর্শে আম্বিয়া বেগম মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে একাদিক মামলা দিয়ে ও বার বার নারাজি দিয়ে তার ভাই ও পরিবারকে অন্যায়ভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে ২০২২ সনের ১৯জুলাই মিথ্যা মারামারির মামলা দায়ের করেন, (বিশ্বনাথ সিআর মামলা নং ৪২২/২২ইং)। মামলাটি বাদীর বিরুদ্ধে ২১১ধারা মোতাবেক প্রসিকিউশন দিয়ে বিজ্ঞ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার এসআই আমিরুল ইসলাম। ওই মামলা উৎকোচ নিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি তদন্ত আব্দুস সালাম চলতি বছরের ৬ এপ্রিল আমাদের বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা চার্জশিট দাখিল করেন।

তিনি জানান- ‘অধ্যক্ষ সিরাজুল হক, তার ভাতিজা মনিরুজ্জামান মনির এবং নাজমুল ইসলাম মকবুলকে আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ধর্ষণের সঠিক তথ্য বের হয়ে আসবে এবং আসল ধর্ষককে চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। অথবা উনারা কাকে দিয়ে ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়ে আমার ভাইকে ফাঁসাতে চাচ্ছেন তাও বের হয়ে আসবে।’

এসব ঘটনায় নিরুপায় হয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে সু-বিচার কামনা করেন।

এ বিষয়ে থানার ওসি তদন্ত আব্দুস সালাম বলেন, ‘এসআই আমিরুল ইসলামের তদন্ত রিপোর্ট ভুল থাকায় তাকে আদালত শোকজ করেন। পূনঃতদন্তে আমি ঘটনা সঠিক পেয়ে চার্জশীট আদালতে প্রেরণ করেছি।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান বদরুল, সহ-সভাপতি মারফত আলী, পৌর কৃষক লীগের আহ্বায়ক বিকাশ মালাকার, মাইক্রোবাস শ্রমিক সমিতির সভাপতি ইউনুছ আলী, সাধারণ সম্পাদক মুহিবুর রহমান গোলাপ, উপজেলা কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, সদস্য লিটন খান, তালেব আলী, সামসুল ইসলাম ও ভুক্তভোগী আব্দুল কাহার প্রমুখ।