বিশ্বনাথে উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্যের অভিযোগ ব্যবসায়ীদের

সিলেট জেলা সমবায় কর্মকর্তা ও বিশ্বনাথ থানার পুলিশ উপপরিদর্শকের বিরুদ্ধে বিশ্বনাথের মাহতাবপুর মাছের আড়তের কমিটি গঠনে উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য, ব্যবসায়ীকে আটকে রেখে টাকা আদায়, দোকান ভাংচুর ও মারধরের অভিযোগ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ব্যবসায়ীরা।

তবে এ সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সিলেট জেলা সমবায় কর্মকর্তা চন্দন দত্ত ও বিশ্বনাথ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অনিক বড়ুয়া।

বুধবার (১৫ মে) বিকেলে মাহতাবপুর বাজার এলাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বাজার কমিটির নেতৃবৃন্দের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে সাবেক মেম্বার হেলাল উদ্দিন বলেন, মাহতাবপুর মাছের আড়তের কমিটি গঠন নিয়ে হাইকোর্টে ২০২২ সালে রিট পিটিশন দায়ের করা হলে হাইকোর্ট একাধিকবার কমিটি গঠনে স্থগিতাদেশ প্রদান করেন যা এখনও বলবৎ আছে।

তিনি বলেন, হাইকোটের নির্দেশ অমান্য করে জেলা সমবায় কর্মকর্তা চন্দন দত্ত রিটকারিদের প্রতিপক্ষ ৩জন লোক দিয়ে একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করেন। সমবায় কর্মকর্তা হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করায় সুপ্রিমকোর্টের আপিলের ডিভিশনে ২০২৩ সালে রিট পিটিশন দায়ের করলে শুনানী শেষে আদালত রিটকারি ১৫জন সদস্যকে কমিটির অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দেন।

হেলাল উদ্দিন বলেন, সমবায় কর্মকর্তা সুপ্রিমকোটের নির্দেশ মানতে বাধ্য নয় বলে জানিয়ে দিয়ে রিটকারী ১৫জনের কাছে ৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। তার এ দাবি অমান্য করায় সমবায় কর্মকর্তা বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আড়তের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার পত্র দেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, এরপর গত ২৭এপ্রিল রাতে এসআই অনিক বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক সামসুল হককে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে এসে কোন মামলা ছাড়াই ১৬ঘন্টা আটক রাখেন এবং পরে ১লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়ে ছেড়ে দেন।

তিনি আরো বলেন, ১৪মে মঙ্গলবার এসআই অনিক মাহতাবপুর আড়তে একদল পুলিশ নিয়ে একটি দোকান ভাংচুর করার চেষ্টা করলে লোকজন বাঁধা দেয়। তখন এসআই অনিকের এলোপাথাড়ি মারপিটে সাদিক আহমদ, আবু মুসা ও তারেক গুরুত্বর জখমপ্রাপ্ত হন।

অভিযোগে বলা হয়, আদালতের নির্দেশ ছাড়া পুলিশ কারো দোকান ও স্থাপনা উচ্ছেদ বা ভাংচুর করতে পারেনা। এসআই অনিক দোকান ভাংচুর করে ২লাখ টাকার ক্ষতি করেছেন ও প্রতিপক্ষের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ করে বেপরোয়া হয়ে মারপিট করেছেন। এতে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।

বক্তা সমবায় কর্মকর্তা চন্দন দত্তের অপসারণ ও এসআই অনিকসহ দায়ি পুলিশের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য আড়তের সভাপতি আব্দুল মন্নান, সাধারণ সম্পাদক সামসুল হক, সদস্য কালা মিয়া, জাকির হোসেন, সফাত আলী, আব্দুস সালাম প্রমুখ।

এ ব্যাপারে বিশ্বনাথ থানার এসআই অনিক বড়ুয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

সিলেট জেলা সমবায় কর্মকর্তা চন্দন দত্ত বলেন, হাইকোর্টের আদেশ আমান্য করার কোন সুযোগ নেই। আইন অনুযায়ী কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য নয়।