তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জেতার আনন্দ উৎসব এখনো শেষ হয়নি, তার মধ্যেই দুঃসংবাদ পেলেন আর্জেন্টাইনরা। গত অক্টোবরে টানা দ্বিতীয় মাস অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে তাদের। ১০০ শতাংশ ছুঁইছুঁই করছে মূল্যস্ফীতির হার। আর মহামারির পর প্রথমবারের মতো বেড়েছে বেকারত্বও।
বুধবার (২১ ডিসেম্বর) আর্জেন্টিনার জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো (আইএনডিইসি) প্রকাশিত তথ্যমতে, গত সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় অক্টোবরে দেশটির অর্থনৈতিক কার্যকলাপ ০.৩ শতাংশ কমেছে। এক বছর আগের তুলনায় সার্বিক অর্থনীতি ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও আর্জেন্টিনার অতিগুরুত্বপূর্ণ কৃষি খাত ছোট হয়েছে।
পরিসংখ্যান বলছে, বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে লাতিন আমেরিকান দেশটিতে বেকারত্বের হার ৬ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ২০২০ সালের পর আর্জেন্টিনায় এই প্রথম বেকারত্ব বাড়লো। বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় দুই লাখ।
আর্জেন্টাইন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশ্লেষকদের সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুসারে, দক্ষিণ আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি ২০২৩ সালে এক শতাংশেরও কম বাড়তে পারে। তবে তার আগে এ বছর পাঁচ শতাংশের বেশি প্রসারিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে উদ্ভূত অনিশ্চয়তা এবং খরার কারণে পণ্য রপ্তানি কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেশটির অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
আর্জেন্টিনার অর্থনীতিতে এরই মধ্যে ব্যাপক রাজস্ব ঘাটতি দেখা দিয়েছে। দেশটির সরকার গত নভেম্বরে ২২ হাজার ৭৮০ কোটি পেসো (আর্জেন্টাইন মুদ্রা) প্রাথমিক রাজস্ব ঘাটতির কথা জানিয়েছিল, যা গত জুনের পর থেকে সবচেয়ে বড় মাসিক ঘাটতি।
একই সময় বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম উৎস পর্যটন খাতও পিছিয়ে পড়েছে। দেশটিতে ভ্রমণকারী আসার চেয়ে বিদেশগামী লোকের সংখ্যা বেশি দেখা গেছে।
সরকারি তথ্য বলছে, গত অক্টোবর মাস পর্যন্ত যত বিদেশি ভ্রমণকারী আর্জেন্টিনায় প্রবেশ করেছে, তার চেয়ে অন্তত ছয় লাখ বেশি আর্জেন্টাইন নাগরিক দেশত্যাগ করেছে। ফুটবল বিশ্বকাপের সময় সেই প্রবণতা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।