বিয়ানীবাজারে সড়কের কাজ ফেলে ঠিকাদার উধাও

বিভাগীয় শহর সিলেটের সাথে অন্যতম যোগযোগ মাধ্যম বিয়ানীবাজার-চন্দরপুর সড়ক। কয়েক বছর থেকে বেহাল এ সড়ক সংস্কারের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রকৌশল বিভাগ থেকে প্রায় ৫ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। বরাদ্দ অনুযায়ী কাজও শুরু হয়। কিন্তু সেই কাজ ফেলে রীতিমতো উধাও হয়ে গেছে ঠিকাদার।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাজ ফেলে উধাও হওয়ার বিষয়টি সম্প্রতি সামনে এনেছে বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রকৌশল অফিস।

দায়িত্বশীলরা জানান, মেসার্স রফিক কন্ট্রাকশন সড়কের এক কিলোমিটার সংস্কার কাজ সম্পন্ন করে আত্মসমর্পন করেছে। সংস্কার কাজের মধ্যে ৩০০ মিটার আরসিসি ঢালাই এবং ৭০০ মিটার বিটুমিনের কাজ হয়েছে। অবশিষ্ট কাজের মধ্যে দুই পাশের বক্স, মেকাডমসহ আরো কিছু কাজ করেছে নিয়োগপ্রাপ্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি। এসব কাজের অর্থ বাদ দিলে ৩ কোটি টাকার কাজ এখনো অসমাপ্ত রয়েছে। অসমাপ্ত কাজের উপর শতকরা হারে প্রতিষ্ঠানটিকে জরিমানা করা হবে বলে জানিয়েছে এলজিইডি।

রাস্তায় খানাখন্দ থাকায় যান চলাচলে ভোগান্তির শিকার স্থানীয়রা

স্থানীয় প্রবীন ব্যক্তি শাহাব উদ্দিন মৌলা বলেন, ‘কাজ শুরু হওয়ায় খুশি হয়েছিলাম আমাদের দুর্ভোগ লাঘব হবে বলে। তিনচার মাস ধরে কাজ বন্ধ হয়ে আছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোনো লোকই সেখানে আসে না। তাদের হঠাৎ উদাও হয়ে যাওয়ার মতো দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরনের কারণে মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে’।

স্থানীয়রা জানান, বিকল্প যোগাযোগ সড়ক না থাকায় চলাচল অনুপযোগী এ সড়কটি দিয়িই বাধ্য হয়ে তাদের চলাচল করতে হচ্ছে।

অটোরিক্সা চালক আনোয়ার হোসেন জানান, ‘বিয়ানীবাজার-চন্দরপুর সড়কে গাড়ি চালানো কঠিন ব্যাপার। রাস্তার যা অবস্থা, তাতে উপার্জনের অধিকাংশই ব্যয় হয় গাড়ি মেরামতে। সেজন্য দুই মাস থেকে গাড়ি বন্ধ রেখেছেন।

রাস্তার অর্ধেক মেরামত করেই লাপাত্তা ঠিকাদার

মাথিউরা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সেলিম উদ্দিন জানান, আরসিসি ঢালাই করার জন্য সড়কের গর্ত করা হয়েছিল। এরপর ইট দিয়ে বক্স করে ঠিকাদার লাপাত্তা। এখন বৃষ্টি হলে গর্তে হাটু পানি জমে থাকে। যেটুকু কাজ হয়েছে সেটাও নষ্ট হচ্ছে। এতে যা ব্যয় হয়েছে তার পুরোটাই গচ্চা।

এ বিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রফিক কন্ট্রাকশনের দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রকৌশলী সাঈফুল আজম জানান, দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রায় এক কিলোমিটারের অংশ সংস্কারসহ আরো কিছু কাজ করেছে। সড়কের অবশিষ্ট কাজের জন্য নতুন টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন। নিয়ম অনুযায়ী ওই প্রতিষ্ঠানকে ৩০ লাখ টাকা জরিমানা দিতে হবে।