রাজধানীর পিলখানায় ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সংঘটিত বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে দেড় দশক পর মুখ খুলেছেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মঈন উ আহমেদ। বৃহস্পতিবার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে সেদিনের ঘটনাচক্র, বিডিআর সদরদপ্তরে কী হয়েছিল, সরকার ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা কেমন ছিল, তা নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
মঈন উ আহমেদ বলেন, ‘বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা আমি যখন তদন্তের নির্দেশ দিই, তখন আমাকে বলা হয়, সরকার এই বিষয়ে তদন্ত করছে। তখন আমাদের এর প্রয়োজনটা কী? এই তদন্ত করতে সরকারের কাছ থেকে যে সাহায্য প্রয়োজন, তা আমরা পাইনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেনাবাহিনীর তদন্ত কমিটির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (বর্তমান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা)। তিনি তাঁর কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারেননি, কারণ অনেকে জেলে ছিলেন। অনেককে প্রশ্ন করা সম্ভব হয়নি। আমার কাছে এসে তিনি বেশ কয়েকবার তাঁর সমস্যার কথা তুলে ধরেন। আমি আশা করি, তিনি এখন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হয়েছেন। তিনি এই তদন্ত কমিটি পুনর্গঠিত করে জড়িতদের বের করতে সক্ষম হবেন। আমি সরকার গঠনের পর তাঁকে এই বিষয়ে অনুরোধ করেছি।’
ঘটনার সময় পিলখানার বাইরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে চলা লাইভ কাভারেজ বিডিআর বিদ্রোহ ছড়িয়ে দিতে নেতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে বলেও সমালোচনা করেন তিনি।
বিদ্রোহ শুরুর খবর পাওয়ার পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিডিআরের ডিজি মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের সঙ্গে তাঁর কথা হয় বলে জানান মঈন উ আহমেদ।
তিনি জানান, ঘটনার দিন সেনাবাহিনীর ব্রিগেড কমান্ডার ও ১০ জন অফিসারের নেতৃত্বে ৬৫৫ জন অফিসার সেদিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অভিযান পরিচালনা করেন। যার নাম দেওয়া হয়েছিল অপারেশন রেস্টোর অর্ডার। আমি সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে (শেখ হাসিনা) বলি, অপারেশন রেস্টোর অর্ডার পরিচালনার শুরুতেই আমাদের একজন সৈনিককে নিহত হতে হয়েছে এবং একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এইমাত্র খবর পেলাম, বিদ্রোহীরা অনেক অফিসারকে হত্যা করেছে। আমি আরও বলি, বিদ্রোহীদের কোনো শর্ত মানা যাবে না। আপনি তাদের বলবেন, অফিসার হত্যা এই মুহূর্তে বন্ধ করতে হবে।’
ভিডিওতে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন তিনি। এ ছাড়া বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে তাঁর লেখা বই খুব শিগগির প্রকাশ করা হবে বলেও জানান তিনি।