নাটোরে হত্যা ও বিস্ফোরক সহ পৃথক তিন মামলায় আদালতে হাজির না হওয়ায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ছবির জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. শরীফ উদ্দিন এই আদেশ দেন।
জানা যায়, মঙ্গলবার হত্যা ও বিস্ফোরকসহ তিন মামলার চার্জ শুনানির দিন নির্ধারিত ছিল। এর মধ্যে যুবলীগ কর্মী পলাশ হত্যা মামলায় দুলু ও বিস্ফোরক মামলায় তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন চার্জ শুনানির দিনে আদালতে হাজির না হওয়ায় আইনজীবী সময় চেয়ে আবেদন করেন। পরে আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ও চার্জ গঠন করেন।
দুলুর আইনজীবী আবুল হোসেন বলেন, দুলু ক্যান্সারে আক্রান্ত। তিনি বর্তমানে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন তার স্বামীর সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। আদালতে চিকিৎসা সনদ উপস্থাপন করে সময় চাওয়া হয়। কিন্তু আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে পৃথক মামলায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
জজ আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত পিপি আরিফুর রহমান বলেন, ২০১২ সালের ৮ ডিসেম্বর রাত ১১টার দিকে যুবলীগকর্মী পলাশ নাটোর স্টেশন থেকে বাড়ি ফেরার পথে শহরের আলাইপুর এলাকায় দুলুর উপস্থিতিতে ১৫ থেকে ১৬ জন অস্ত্রধারী তার পথরোধ করে। এ সময় পলাশকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করা হলে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পলাশ মারা যায়। এ ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোর্ত্তজা আলী বালু বাদী হয়ে দুলুসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ২০২০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর দুলুসহ ১১ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করে।
তিনি বলেন, এছাড়া ২০১৭ সালের ৩ ডিসেম্বর সকালে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা একটি মিছিল নিয়ে দুলুর বাড়ি অতিক্রম করার সময় বিএনপির কর্মী ও সমর্থকরা ওই মিছিলের ওপর ককটেল নিক্ষেপ ও গুলিবর্ষণ করে। এতে তৎকালীন সদর উপজেলা সভাপতি রুবেল গুলিবিদ্ধসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম মাসুম বাদী হয়ে দুলুর স্ত্রী সাবিনা ইয়াছমিনসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ২৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজ ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহিন বলেন, সরকারের ফরমায়েশি আদালত মরণব্যাধি ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে পরোয়ানা দিয়ে সরকারের আসল চেহারা প্রকাশ পেয়েছে।