পৃথিবী থেকে ১৩৭ আলোকবর্ষ দূরে একটি বাসযোগ্য গ্রহের সন্ধান পাওয়া গেছে। যেটিকে সুপার আর্থ বলছেন বিজ্ঞানীরা।
আমাদের সৌরজগতের বাইরে আর কোনো বাসযোগ্য গ্রহ আছে কিনা, তা নিয়ে অনুসন্ধান চলছে আগে থেকেই। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আংশিক সফল হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এবার আরও একটি সম্ভাব্য বাসযোগ্য গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন তারা।
বিজ্ঞানবিষয়ক সংবাদমাধ্যম সায়েন্স অ্যালার্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রানজিটিং এক্সোপ্ল্যানেটারি সার্ভে স্যাটেলাইট এই গ্রহটিকে শনাক্ত করেছে। ব্রিটেনের রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির বিজ্ঞানীরা এই গ্রহের নাম দিয়েছেন টিওআই-৭১৫ বি। গ্রহটির ব্যাসার্ধ পৃথিবীর ব্যাসার্ধের ১ দশমিক ৫৫ গুণ।
গ্রহটি টিওআই-৭১৫ নামে একটি লাল বামন বা রেড ডোয়ার্ফ তারাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে। তবে তারকাটি থেকে এটি যে দূরত্বে অবস্থিত, সেই বিবেচনায় তা বাসযোগ্য হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রাখে। ওই সৌরজগতে অন্য কোনো বাসযোগ্য গ্রহ নেই বলেও জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
টিওআই-৭১৫ খুবই সাধারণ গড়নের একটি লাল বামন তারকা। এটি ভরের দিক থেকে সূর্যের এক-চতুর্থাংশ এবং ব্যাসার্ধের দিক থেকেও প্রায় এক-চতুর্থাংশ। নতুন আবিষ্কৃত গ্রহটি এর সূর্যের বেশ কাছাকাছি এবং এটি এই তারকাকে প্রদক্ষিণ করতে মাত্র ১৯ দিন সময় নেয়। যেহেতু লাল বামন তারকাগুলো সূর্যের তুলনায় অনেক বেশি ম্লান, তাই এর আশপাশে থাকা গ্রহগুলোর বাসযোগ্য হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
এর আগে গত বছর বিজ্ঞানীরা আমরা ছায়াপথ মিল্কিওয়ে বা আকাশগঙ্গায় এক সুসংহত সৌরজগৎ আবিষ্কার করেন। এই সৌরজগতে গ্রহের সংখ্যা ছয়। বিজ্ঞানীরা এ গ্রহগুলোর ঘূর্ণনে এত বেশি ভারসাম্য খুঁজে পেয়েছেন, তারা এই সৌরজগৎকে অনেক বেশি সুসংহত বলেই মনে করছেন।
তাদের দাবি, এই সৌরজগৎ সৃষ্টির পর কয়েকশ কোটি বছর ধরে বাইরের কোনো শক্তির কারণে ভারসাম্যহীন হয়নি।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এইচডি ১১০০৬৭ নামে পরিচিত এই তারকার আশপাশে আপাতত ছয়টি গ্রহের দেখা মিলেছে। এই ছয় গ্রহই আমাদের পৃথিবীর আকারের চেয়ে দুই বা তিন গুণ বেশি বড়। তবে এই গ্রহগুলোর ঘনত্ব আমাদের সৌরজগতের গ্যাসীয় গ্রহগুলোর ঘনত্বের প্রায় সমান। গ্রহগুলো এইচডি ১১০০৬৭ নামে তারকাকে কেন্দ্র করে ৯ থেকে ৫৪ দিনে একবার আবর্তন করে। ফলে স্বাভাবিকভাবে এই গ্রহগুলো নক্ষত্রটির খুবই কাছে হওয়ায় সেগুলো অনেক বেশি গরম।
গ্যাসীয় গ্রহ হলেও বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, এই গ্রহগুলোর কেন্দ্রভাগ পাথর, ধাতব পদার্থ বা বরফে গঠিত, যার ওপরে রয়েছে হাইড্রোজেনের বিশাল আস্তরণ। তবে গ্রহগুলোর বায়ুমণ্ডল কেমন, সে বিষয়ে জানতে হলে আরও গবেষণার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষণা নিবন্ধটির সহযোগী লেখক ও স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের ইনস্টিটিউট অব অ্যাস্ট্রোফিজিকসের গবেষক এনরিক প্যালে বলেন, এ গ্রহগুলো তাদের তারকাকে কেন্দ্র করে একটি নির্দিষ্ট তালে আবর্তিত হচ্ছে। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, খুবই সুশৃঙ্খলভাবে আবর্তিত হচ্ছে।