বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) সিলেট জেলা শাখার এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টায় রাজা ম্যানশনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় জেলা সংগঠক সঞ্জয় কান্ত দাসের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরাম ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক কমরেড মাসুদ রানা।
সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সঞ্জয় কান্ত দাসকে সমন্বয়ক করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট জেলা সাংগঠনিক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, অজিত রায়, নমিতা রায়, সুমিত কান্তি দাশ পিনাক, বুশরা সুহেল, দোয়েল রায়, মিসবা খান প্রমুখ।
সভায় কমরেড মাসুদ রানা বর্তমান রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘ছাত্র জনতার এক অভূতপূর্ব অভুত্থানের মধ্যে দিয়ে গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও একটি বৈষম্যহীন সমাজ বির্নিমাণের লক্ষ্যে ছাত্র-জনতা অকাতরে নিজের জীবন উৎসর্গ করেন। অভ্যুত্থানের পরবর্তীতে যে বিপুল আগ্রহ নিয়ে মানুষ বর্তমান সরকারের দিকে তাকিয়ে আছে, গত ৫মাসের কার্যক্রম সে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। সরকার এখন পর্যন্ত জুলাই হত্যাকান্ডের বিচার কাজ শুরু করেনি। এখনও সরকারি উদ্যোগে আহত-নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করতে পারেনি। এমনকি আহতের চিকিৎসা কার্যক্রমেও পর্যাপ্ত সহযোগিতা করছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি, বরং বহাল তবিয়তেই আছে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা। বিভিন্ন সেক্টরের শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য মজুরি পাচ্ছেন না। মজুররি জন্য আন্দোলনে নামলে পুলিশি হামলা, এমনকি গুলি করে হত্যার মতো ঘটনা ঘটেছে। অর্থ-পাছারকারী ও লুটপাটকারী ব্যবসায়ী, আমলা, মন্ত্রীদের এখনও আইনের আওতায় আনেনি সরকার। এমনকি মত প্রকাশের অধিকারের জন্য যে অভ্যুত্থান সংগঠিত হলো, সেই অভ্যুত্থানের পর প্রস্তাবিত সাইবার সিকিউরিটি আইনে আওয়ামী আমলে প্রণীতি নিপীড়নমূলক বিভিন্ন ধারা জারি রাখা হয়েছে। ‘মব‘ তৈরি করে হামলা, মন্দির, মাজারে হামলা, অগ্নি সংযোগের মতো ঘটনা ঘটেছে। সরকারের এ সমস্ত কর্মকান্ড গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে প্রশ্নবৃদ্ধ করছে।’
মাসুদ রানা বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে মানুষ সক্রিয় হয়ে উঠে, মানুষই যে সকল ক্ষমতার নিয়ন্ত্রক তা স্পষ্ট হয়ে উঠে। অভ্যুত্থানে মানুষের এই সক্রিয়তা ও সচেতনতাকে সামনে তুলে ধরে সামনের দিনে যেকোন অন্যায়, জবরদস্তি এবং অগণতান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন গতে তুলতে হবে। একই সাথে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়া সরাকরের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। এ কারণে সংস্কার ও নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষাণা করতে হবে।’