গত বছরের ১৯ জুন রথীন্দ্র দাসের স্ত্রীসহ দুই সন্তান বানের জলে ভেসে গিয়ে নিখোঁজ হন। তার বাড়িতে গিয়ে তার সার্বিক খোঁজখবর নিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী এ্যাড. শিশির মনির। তিনি ঢাকা থেকে আসার আগেই শাল্লায় দুই দিনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন। রথীন্দ্র দাসের বাড়িতে যাওয়া ও তার খোঁজখবর নেওয়ার সিডিউলও ছিল তার সেই কর্মসূচির অংশ ছিল।
এ লক্ষ্যে রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় উপজেলা সদর থেকে নৌকাযোগে রথীন্দ্র দাসের বাড়িতে যান তিনি। এসময় রথীন্দ্র দাসের হাতে আর্থিক সহযোগিতা হিসেবে নগদ ১০ হাজার টাকা তুলে দেন শিশির মনির।
সেখান থেকে এসে শাসখাই বাজারে উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্য শিশির মনির বলেন,’ আমাদের সবাইকে মিলেমিশে সমাজের হতদরিদ্রদের জন্য কাজ করতে হবে। আমাদের সমাজকে সবাই মিলে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বক্তব্য দিয়ে সম্পর্ক তৈরি করা যায় না। মানুষের সাথে মিশতে হবে। মানুষের সাথে মিশতে পারলেই সুসম্পর্ক তৈরি হবে। এখানে ধর্ম-বর্ণের মধ্যে পার্থক্য খুঁজলে চলবে না। কেউ যদি ধর্ম মানে সে অন্যের সাথে কখনো প্রতারণা করতে পারে না। তাদের ভেতরে ভয় থাকার কথা। কেউ যদি আল্লাহকে ভয় না করে তাহলে তার আবার ধর্ম কিসের। কোনদিন কারো ক্ষতি করা যাবে না। আপনি একজনের উপকার করতে না পারেন তবে কারো ক্ষতি করা যাবে না। চুপ থাকাও এক ধরণের উপকার। একজন যদি কারো উপর চাপ সৃষ্টি করে, অত্যাচার করে, নির্যাতন করে এটা কোন ধর্মের বিধান হতে পারে না। ওই এলাকার শাসখাই, বিলপুর একাংশ,দত্তপাড়া,মৌরাপুর,আগুয়াই এই পাঁচটি গ্রামের বিদ্যুতের ব্যাপারে তিনি বলেন আমি রহিম আফরোজ ও পল্লী বিদ্যুৎ কতৃপক্ষের সাথে কথা বলব।’ তাদের সাথে কথা বলে যদি কোন সমাধান না হয় এই বিষয়টি নিয়ে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে জানান।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ১৯ জুন দুই সন্তান নিয়ে শাল্লা সদরে আসার পথে শাল্লা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় তীব্র স্রোতের ধাক্কায় ভেসে গিয়ে নিখোঁজ হয় রথীন্দ্র দাসের স্ত্রী ও দুই শিশু বাচ্চা। তারা হলেন- উপজেলার ২নং হবিবপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত বিলপুর গ্রামের একই পরিবারের রথীন্দ্র দাসের স্ত্রী দূর্লভ রানী দাস (৩০) তার মেয়ে জবা রাণী দাস (৭) ও ছেলে বিজয় দাস (৫)। পরে এলাকাবাসী,পুলিশ ও ফায়ারসার্ভিসের একান্ত সহযোগিতায় পৃথক পৃথকভাবে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
তৎকালীন সময়ে ঘটনাস্থলে প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১৯ জুন রবিবার অনুমান সন্ধা ৭টায় বিলপুর গ্রামের রথীন্দ্র দাসের স্ত্রী দুর্লভ রানী দাস একটি ছেলে ও একটি মেয়ে বাচ্চা সহ ওই মহিলা শাল্লা ব্রিজে উঠার সময় পাকা রাস্তায় (বাহাড়া রোড) পার হওয়ার সময় একে একে তিনজনই স্রোতের ধাক্কায় ভেসে গিয়ে নিখোঁজ হন। ঘটনা শোনার পর পরই ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে খবর দেওয়া হলে ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পরই উদ্ধার কাজ চালান। পরবর্তীতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রথীন্দ্র দাসকে নগদ ২০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছিল।