হবিগঞ্জ জেলার এক সময়ের ভাটি অঞ্চলের রাজধানীখ্যাত আজমিরীগঞ্জ উপজেলার শিবপাশা ইউনিয়নের বাসিন্দা খালেদ চৌধুরী। জীবিকার তাগিদে দীর্ঘদিন প্রবাসে কাটানোর পর দেশে ফিরে নিজেকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে ২০১৪ সালে নিজের ব্যাক্তিগত ৩২ একর জমিতে পর্যায়ক্রমে ১৪ টি পুকুর খনন করে গড়ে তুলেন মাদানী এগ্রো ফার্ম (মাদানী পল্লী) নামে একটি মৎস্য চাষের খামার। পুকুরে রুই, কাতল, মৃগেল, তেলাপিয়া, পাঙ্গাসসহ নানান জাতীয় দেশীয় মাছ চাষ এবং পুকুড় পাড়ে নানান জাতের ফলের গাছ লাগান তিনি। ইতিমধ্যে মাদানী পল্লীতে কর্মসংস্থান হয় দশজন স্থানীয় বেকার যুবকের।
কোটি টাকা পুঁজিতে শুরু করা খামারে লাভের মুখ দেখার আগেই গত ১৯ জুন আকস্মিক বন্যায় ডুবে যায় খালেদ চৌধুরীর স্বপ্ন। শুধু খালেদ চৌধুরীই নন এই উপজেলার ৭৩৮ টি মৎস্য খামার সহ জেলার মোট ৫৮৫৩ টি খামার এবং খামারির স্বপ্ন ডুবে গেছে এই বন্যায় ।
জেলা মৎস্য অফিস সুত্রে জানাগেছে, জেলার বিভিন্ন উপজেলার ৫৮৫৩ টি মৎস্য খামার বন্যায় তলিয়ে গেছে। খামারে উৎপাদিত মাছ এবং অবকাটামো সহ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ একশত কোটি টাকার ও বেশী।
তবে খামারীদের দাবি বন্যায় তাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কয়েকগুণ বেশী। খালেদ চৌধুরী জানান, ২০১৪ সাল থেকে নিজের ৩২ একর জায়গায় এক এক করে ১৪ টি পুকুর করেছিলেন তিনি। পুকুরে রুই, কাতল, মৃগেল, তেলাপিায়া, পাঙ্গাস মাছসহ পুকুরপাড়ে হরেক রকমের ফলের গাছ ছিল। ১০ জন লোকের কর্মসংস্থান ছিল তার খাামারে। স্বপ্ন ছিল ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ পরিসরে খামার করে অসংখ্য লোকের কর্মসংস্থান করবেন তিনি। কিন্তু আচমকা এক বন্যায় সব স্বপ্ন ভেসে গেল তার।
তিনি আরো বলেন, বদ্ধ জলাশয়ে মৎস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ সারাবিশ্বে ৫ম স্থানে রয়েছে। দেশে মাছের চাহিদার প্রায় ৬০ শতাংশ আসে এই চাষের মাছ থেকে। সকল ক্ষতিগ্রস্থ মৎস্য খামারীদের প্রণোদনা দিয়ে টিকিয়ে রাখার জন্য সরকারের প্রতি আহবান ও জানান তিনি।
এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান-জেলায় মোট ৫৮৫৩ টি খামার পানিতে ডুবে গেছে । ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় একশ কোটি চল্লিশ লাখ টাকা । খামারিদের প্রণোধনার বিষয়ে নজরুল ইসলাম জানান,বিষয়টি আমরা উর্ধতন কতৃপক্ষকে জানিয়েছি,উর্ধতন কতৃপক্ষের সিদ্ধান্ত আসলে আমরা এ বিষয়ে বলতে পারবো ।