বাড়তে পারে গ্যাসের দাম

এবার গ্যাসের দাম বাড়তে পারে বলে জানা গেছে। খুচরা পর্যায়ে এই দাম বৃদ্ধির হার ১৭ শতাংশ হতে পারে। গ্যাসের দাম বাড়াতে ইতিমধ্যে তিতাসসহ বিতরণ সংস্থাগুলো গ্যাসের দাম ও বিতরণ খরচের সমন্বয় চেয়ে সম্প্রতি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে।

এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন করে গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসবে শিল্প খাত, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে। মূল্যস্ফিতি বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে ভোক্তা পর্যায়ে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, শিল্প ও ছোট আকারের ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ ইউনিটগুলো এখন প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের জন্য যে ১১ দশমিক ৭৮ টাকা দিচ্ছে, তা একসঙ্গে বেড়ে ২৪ টাকায় গিয়ে ঠেকবে।

প্রস্তাবিত মূল্য অনুযায়ী, এক চুলা ব্যবহারে প্রতি মাসে খরচ বর্তমান মূল্যের সঙ্গে যোগ হবে ১৬৮ টাকা। দুই চুলা ব্যবহারে বর্তমান মূল্যের সঙ্গে যোগ হবে ১৮৩ টাকা।

সূত্র মতে, বর্তমানে দিনে মোট ১ হাজার ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে। বাকি ৮ থেকে ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি আমদানি করা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে মেটানো হতো। কিন্তু বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম উর্ধ্বমুখী থাকায় আপাতত এলএনজি আমদানি বন্ধ রাখা হয়েছে।

জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববাজারে জ্বালানির এই বাড়তি দামের কারণে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসে (এলএনজি) সবচেয়ে বেশি লোকসান গুণতে হচ্ছে সরকারকে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি বছরে এলএনজির জন্য প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকির দরকার হবে। এখন খোলাবাজার থেকে প্রতি এমএস বিটিইউ এলএনজি ৩২ থেকে ৩৬ ডলারের নিচে কেনা সম্ভব হচ্ছে না।

বাড়তি দামে তিনটি এলএনজি কার্গো কেনা হচ্ছে। আর এতে সরকারের দুই হাজার কোটি টাকার বেশী খরচ হচ্ছে। এর বাইরে জ্বালানি তেলেও বিপুল লোকসান গুণতে হচ্ছে সরকারকে। এই পরিস্থিতিতে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বাড়িয়ে আমদানিকৃত জ্বালানির ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করার পরিকল্পনা করছে সরকার।

জ্বালানি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এবারের মূল্য বৃদ্ধির পর চলতি ২০২৩ অর্থবছরে জ্বালানি খাতে সরকারের দেওয়া ৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি অনেকটাই কমে যাবে।

সবশেষ, ২০১৯ সালে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম ৩২ শতাংশ বাড়িয়েছিল বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। যা ওই বছরের ১ জুলাই থেকেই কার্যকর করা হয়। ওই সময় আবাসিক খাতে দুই চুলার খরচ ৮০০ থেকে বাড়িয়ে করা হয় ৯৭৫ টাকা আর এক চুলার খরচ ৭৫০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ৯২৫ টাকা। এরপর ২০২২ সালের জুনে গ্যাসের ২৩ শতাংশ দাম বাড়াতে বিইআরসি গণশুনানির পর ঘোষণা দিলেও তা কার্যকর করা হয়নি।