বাজে ফিল্ডিং-বোলিংয়ে হেরে শুরু বাংলাদেশের বিশ্বকাপ

ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে মাত্র ১২৬ রানের সংগ্রহ পেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে মারুফা আক্তারের আগ্রাসী বোলিংয়ে সেই রান ডিফেন্ড করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু পেয়েছিল নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। কিন্তু বাকি বোলারদের ব্যর্থতা আর ফিল্ডারদের ছন্নছাড়া ফিল্ডিংয়ে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে বাংলাদেশকে।

রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে লঙ্কান মেয়েদের বিপক্ষে বাংলাদেশ হেরেছে সাত উইকেটের ব্যবধানে। অন্যদিকে চলতি আসরে এ নিয়ে টানা দুই জয় পেল শ্রীলঙ্কা।

টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ওভারের প্রথম বলে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হয়ে ফিরে যান ওপেনার মুর্শিদা খাতুন।

তবে আরেক ওপেনার শামিমা সুলতানা ও তিন নম্বরে নামা সোহানার আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দ্রুত গতিতে রান ওঠে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই এক তিন চার মারেন সোহানা।

ইনিংসের ৫ম ওভারে ফেরার আগে শামিমার ব্যাট থেকে আসে ১৩ বলে চারটি চারে ২০ রানের ইনিংস। পাওয়ার প্লেতে দুই উইকেট হারালেও ৪৮ রান যোগ হয় টাইগ্রেসদের স্কোরবোর্ডে। এরপর আস্তে আস্তে রানের গতি কমতে থাকে বাংলাদেশের।

ইনিংসের ১০ম ওভারে দলীয় ৭১ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৩২ বলে পাচ চারে ২৯ রান করে ফিরে যান সোহানা।দুর্দান্ত পাওয়ার প্লের পরও লম্বা সময় ধরে কোনো বাউন্ডারিই মার‍তে পারেনি বাংলাদেশ।

মিডল ওভারে টাইগ্রেস ব্যাটারদের উপর দাপট দেখিয়েছে লঙ্কান বোলাররা। ১৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ফিরে যান অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। ৩৪ বলে তার ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ২৮ রান, যেখানে মারতে পেরেছেন মাত্র একটি বাউন্ডারি।

অধিনায়ক ফেরার পর মাত্র এক বলের ব্যবধানে ১৩ বলে ১১ রান করে ফিরে যান লতা মন্ডল। ১৭তম ওভারের তৃতীয় বলে হাস্যকর রানআউট হয়ে ফেরেন রিতু মনি।

অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে আগ্রাসী ব্যাটিং করা স্বর্ণা আক্তারও এদিন ব্যর্থ। দলীয় ১০৫ রানে ফেরার আগে অভিষেক ম্যাচে ছয় বলে পাচ রান করেছেন তিনি।

ইনিংসের শেষ ওভারে আরও এক উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আট রানে ফেরেন নাহিদা আক্তার। শেষ পর্যন্ত আট উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ১২৬ রানের সংগ্রহ পেয়েছিল বাংলাদেশ।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দারুণ শুরু পেয়েছিল শ্রীলঙ্কা। তবে ইনিংসের চতুর্থ ওভারে বল হাতে নিয়েই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা লঙ্কান অধিনায়ক চামারি আত্তপাত্তুকে ফেরান পেসার মারুফা আক্তার।

পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে তো হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন মারুফ। ওভারের প্রথম দুই বলে ফিরিয়ে দেন লঙ্কান ব্যাটার ভিশমি গুনারত্নে ও আনুশকাকে। ২৫ রানে তিন উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে লঙ্কানরা।

তবে এরপর শুধু বাংলাদেশি বোলার ফিল্ডারদের ব্যর্থতার গল্প। ছন্নছাড়া ফিল্ডিং আর বোলিংয়ে উল্টো নিজেদের উপর শ্রীলঙ্কাকে দাপট দেখানো সুযোগ দিয়েছেন বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা।

আর এই সুযোগে শ্রীলঙ্কার জয়ের রাস্তা তৈরি করেছেন ওপেনার মাধবি ও নিলাকসি ডি সিলভা। ৪১ বলে ফিফটি স্পর্শ করা মাধবিই টাইগ্রেস বোলারদের উপর বেশি দাপট দেখিয়েছেন। আর তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন নিলাকসা।

শেষ ১০ ওভারে সমীকরণ ছিল ৭৮ রানের। এরপর চার ওভারে ৩২ রান তুলে জয়ের পথ আরও সহজ করে ফেলেন মাধবি ও নিলাকসা।

শেষ পর্যন্ত দুজনের ১০৪ রানের দুর্দান্ত জুটিতে ১০ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌছে যায় শ্রীলঙ্কা। এই প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টানা দুই ম্যাচে জয় পেলো শ্রীলঙ্কা। শেষ পর্যন্ত ৫০ বলে আট চার ও এক ছক্কায় ৬৯ রানে অপরাজিত ছিলে মাধবি আর অন্যপ্রান্তে নিলাকসার সংগ্রহ ৩৮ বলে দুই চারে ৪১ রান।