বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাব্যতা যাচাই করুন : যুক্তরাষ্ট্রে মোমেন

সরকারের পরিকল্পিত বিকাশমান বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহ এবং হাই-টেক পার্ক নির্মাণ ও এর প্রাপ্ত সুযোগ সুবিধাসমূহের বর্ণনা দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পপতি ও বিনিয়োগকারীদেরকে আরও গুরুত্ব সহকারে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক এক বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান। এক্ষেত্রে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জাহাজ নির্মাণ শিল্প, তথ্য-প্রযুক্তি, ইলেকট্রিক ভেহিকল, কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং স্বাস্থ্য খাতসমূহের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।

নিউইয়র্কস্থ হার্ভার্ড ক্লাবে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিজনেস কাউন্সিল ফর ইন্টারন্যাশনাল আন্ডারস্টান্ডিং (বিসিআইইউ) প্রেসিডেন্ট পিটার টিচানস্কিসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ ও নিউইয়র্কের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান/সংস্থার প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বিশেষ করে, দারিদ্র্য বিমোচন, তথ্য-প্রযুক্তি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং সড়ক ও যোগাযোগ অবকাঠামোর ক্ষেত্রে যে অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধিত হয়েছে তা বর্ণনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের অন্যতম ব্যবসায়িক অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানিকে আরও বহুমুখী ও প্রসারিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান বাণিজ্যিক সম্পর্কের হালনাগাদ চিত্র তুলে ধরে তিনি তৈরি পোশাকের পাশাপাশি ওষুধ, পাট ও পাটজাত দ্রব্য এবং সিরামিক সামগ্রী যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির অপার সম্ভাবনা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান, কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (জাতিসংঘ), তৌফিক ইসলাম শাতিলসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সাম্প্রতিক সময়ে মেট্রোরেল উদ্বোধনসহ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতার এক অনুপম উদাহরণ বলে উল্লেখ করে ড. মোমেন। আঞ্চলিক কানেকটিভিটি হাবে পরিণত হওয়া, মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রমবৃদ্ধি, ভূ-রাজনৈতিকভাবে কৌশলগত অবস্থান, জনমিতিগত সুবিধা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ অবকাঠামো উন্নয়ন ও বিভিন্ন ধরনের ট্যাক্স ও ট্যাক্স বহির্ভূত সুবিধাসমূহ বিবৃত করে বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বিনিয়োগ বান্ধব গন্তব্য বলে আখ্যায়িত করেন তিনি।

বৈঠকে উপস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিগণ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সফলতা ও অর্জনের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তারা বাংলাদেশের জনগণের অদম্য স্পৃহা, ইতিবাচক মনোভাব এবং ব্যবসায়িক উদ্যোগ ও সৃজনশীলতায় মুগ্ধতা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক ও বিনিয়োগ সম্পর্ককে ত্বরান্বিত করতে তারা সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। আগামী ১১-১২ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠেয় ব্যবসা সম্মেলনের আমন্ত্রণের মধ্য দিয়ে বৈঠকের সমাপ্তি ঘটে।