বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা খাতে ৫ বছরের পরিকল্পনা ইউএসএইডের

যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল ফুড সিকিউরিটি স্ট্রাটেজি (জিএফএসএস) এর আওতায় বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তায় একটি ৫ বছর মেয়াদী প্ল্যান গ্রহণ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দাতা সংস্থা ইউএসএইড। সংস্থাটির ইকোনমিক গ্রোথ অফিস এর ডেপুটি ডাইরেক্টর জোসেফ লেজার্ড এমন তথ্য জানিয়েছেন।

বুধবার (১৩ জুলাই) দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র উদ্যোগে ইউএসএইড এর প্রতিনিধিদলের সাথে সিলেট চেম্বার নেতৃবৃন্দের এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি। মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট চেম্বারের সভাপতি তাহমিন আহমদ।

সভায় ইউএসএইড এর ইকোনমিক গ্রোথ অফিস এর ডেপুটি ডাইরেক্টর জোসেফ লেজার্ড বলেন, ইউএসএইড বাংলাদেশে আবহাওয়া, জলবায়ু পরিবর্তন, ফুড সিকিউরিটি, জনপুষ্টি, দারিদ্র বিমোচন, কৃষি নির্ভর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার অর্ধশতাব্দী যাবৎ বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতের উন্নয়নে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। সম্প্রতি ইউএসএইড যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল ফুড সিকিউরিটি স্ট্রাটেজি (জিএফএসএস) এর আওতায় বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তায় একটি ৫ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ অনেক সম্ভাবনাময় দেশ। কিন্তু কিছু সমস্যার কারণে বাংলাদেশের উন্নয়ন খাতে কাজ করা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক চ্যালেঞ্জিং। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমরা বাংলাদেশের বিভিন্ন চেম্বার অব কমার্স ও সংস্থার সাথে পর্যায়ক্রমে মতবিনিময় করছি। সঠিক সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে পারলে আমরা তা নিরসনে সরকারকে সহযোগিতা করতে পারবো।

স্বাগত বক্তব্যে সিলেট চেম্বারের সভাপতি তাহমিন আহমদ বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নে সহযোগী হিসেবে কাজ করার জন্য ইউএসএইড ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ কৃষি নির্ভর দেশ। এখানে প্রচুর খাদ্য-শস্য ও ফলমূল উৎপাদিত হয় ও বিদেশে রপ্তানী হয়। সেদিক বিবেচনায় জিএফএসএস এর আওতায় বাংলাদেশে ফুড সিকিউরিটি সেক্টরে ৫ বছর মেয়াদী প্ল্যান অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

তিনি বলেন, সিলেটে বিশ্বমানের টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার এর অভাব রয়েছে। এখানে গড়ে উঠা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সমূহে প্রয়োজন অনুযায়ী দক্ষ কর্মী পাওয়া যায় না। তাই তিনি সিলেটে বিশ্বমানের টেকনিক্যাল ট্রেনিং ইন্সটিটিউট ও ল্যাংগুয়েজ একাডেমি গড়ে তোলার আহবান জানান।

সভায় বক্তাগণ সিলেট থেকে বিমানযোগে ইউরোপ ও আমেরিকায় কৃষিপণ্য রপ্তানির লক্ষ্যে প্যাকিং হাউজ স্থাপন, মাটির গুণাগুণ রক্ষায় চাল ও অন্যান্য খাদ্যশস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে কেমিক্যাল সারের বদলে সী-উইড ব্যবহার সহজলভ্যকরণ, বৈজ্ঞানিক উপায়ে চাষাবাদের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রপাতি প্রাপ্তি ও সোলার পাওর্য়াড সেচ ব্যবস্থা প্রণয়নে কৃষকদের সহযোগিতাকরণ এবং কৃষিপণ্য সংরক্ষণে কোল্ড স্টোরেজ এর সংখ্যা বৃদ্ধিকরণে ইউএসএইড এর সহযোগিতা কামনা করেন।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, প্রতিনিধিদলের সদস্য জেকব মরিন, অনিরুদ্ধ রায়, ফরহাদ হোসেন, মোহাম্মদ নুরুজ্জামান, শফিকুর রহমান, আখতার আহমেদ পিএইচডি, ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট এর রিসার্চ এনালিস্ট মীর রায়হানুল ইসলাম, রাইসা শ্যামা, সিলেট চেম্বারের পরিচালক আলীমুল এহছান চৌধুরী, দেবাংশু দাস, ইউকেবেট এর মোঃ আসাদুজ্জামান সায়েম, জিয়া ইসলাম, জালালাবাদ ভেজিটেবল এক্সপোর্টার্স গ্রুপের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সিলেট চেম্বারের সদস্য মোঃ আবুল কালাম, আব্দুল বাছিত সেলিম, মোঃ জহির হোসেন, আরিফ হোসেন, নাজমুল ইসলাম, সিলেট চেম্বারের সচিব মোঃ গোলাম আক্তার ফারুক ও কর্মকর্তাবৃন্দ।