বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধিতে আগ্রহী ইন্দোনেশিয়া

বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত মি. হেরু হারতানতো সুবোলো। তিনি বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়া বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধিতে আগ্রহী। বাংলাদেশের বিজনেস কমিউনিটির পক্ষ থেকে যেকোন উদ্যোগ আমরা সানন্দে গ্রহণ করবো।’

বুধবার (০৩ মে) বিকাল ৪টায় সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এমন আগ্রহের কথা জানান।

চেম্বার কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট চেম্বারের সভাপতি তাহমিন আহমদ।

সভায় ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশ ইন্দোনেশিয়ার বন্ধু রাষ্ট্র। আমাদের মধ্যে ধর্মীয় ও সামাজিক দিক থেকে অনেক মিল রয়েছে। বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার হতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত।’

আগামী অক্টোবর মাসে জাকার্তায় একটি ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস এক্সপো অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে উক্ত এক্সপো-তে অংশগ্রহণের জন্য তিনি সিলেট চেম্বারকে আমন্ত্রণ জানান।

তিনি বলেন, ঢাকায় ইন্দোনেশিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (আইবিসিসিআই) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ সংগঠনটি দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে কাজ করছে। এসময় তিনি ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য সম্ভাবনাময় খাতগুলো খুঁজে বের করার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন।

চিকিৎসা ও ঔষুধ শিল্প খাতে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে তিনশতাধিক ঔষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানী রয়েছে এবং এখানে চিকিৎসা সেবা ইন্দোনেশিয়ার তুলনায় অনেক সস্তা। এ খাতটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। তিনি বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের ইন্দোনেশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় সমূহে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের আহবান জানান।

এছাড়াও তিনি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও পর্যটন সম্পর্ক বৃদ্ধির ব্যাপারে ইন্দোনেশিয়া দূতাবাসের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।

সভাপতির বক্তব্যে সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও এফবিসিসিআই এর পরিচালক তাহমিন আহমদ বলেন, বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে শক্তিশালী বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে। তবে ইন্দোনেশিয়া থেকে বাংলাদেশে পণ্য আমদানির তুলনায় বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি নিতান্ত কম।

তিনি বলেন, গত ২০২১ সালে ইন্দোনেশিয়া থেকে বাংলাদেশে ২.৯২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানির বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ১০৫ মিলিয়ন ডলারের পণ্য, যেখানে বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় ২.৮১ বিলিয়ন ডলার। এই বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি পূরণে তিনি বাংলাদেশী পণ্য ইন্দোনেশিয়ায় প্রবেশে সকল ধরণের শুল্ক ও অশুল্ক বাঁধাসমূহ দূরীকরণের আহবান জানান।

প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সকল সূচকে অভূতপূর্ব উন্নতি লাভ করেছে উল্লেখ করে চেম্বার সভাপতি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ বিরাজ করছে। তিনি সিলেটের সম্ভাবনাময় শিল্প, চিকিৎসা, শিক্ষা, পর্যটন, আইটি ইত্যাদি খাতে বিনিয়োগের জন্য ইন্দোনেশিয়ার বিনিয়োগকারীদের আহবান জানান।

সভায় ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যকার বাণিজ্য সম্পর্ক এবং সিলেটে বিনিয়োগের সম্ভাবনাময় খাতসমূহ নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. ফজলে এলাহী মো. ফয়সাল।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, সহ সভাপতি মো. আতিক হোসেন, পরিচালক মুশফিক জায়গীরদার, আলীমুল এহছান চৌধুরী, ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী (রাজিব), ফাহিম আহমদ চৌধুরী, দেবাংশু দাস মিঠু, কাজী মো. মোস্তাফিজুর রহমান, মো. সারোয়ার হোসেন ছেদু, সচিব মো. গোলাম আক্তার ফারুক, প্রতিনিধিদলের সদস্য ইন্দোনেশিয়া এম্বেসীর পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স এর কাউন্সেলর রাদেন উসমান এফেন্দী, থার্ড সেক্রেটারি ফিতরি নুরীল ইসলামী, সাপতো রুদিয়ান্তো, সিতি আয়ু প্রমেশ্বরী, মাহেশা আব্বি, ইউকেবেট এর এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান সায়েম, মেট্রোপলিটন চেম্বারের পরিচালক মো. জহির হোসেন, সিলেট চেম্বারের সদস্য নিয়াজ মো. আজিজুল করিম, মনোরঞ্জন চক্রবর্তী সবুজ, এস এম শায়েস্তা তালুকদার, জয়দেব চক্রবর্তী, মাছনুন আকিব বড়ভূঁইয়া, সানজিদা খানম, সুষমা সুলতানা রুহি, আফজাল বক্স, জিয়া ইসলাম প্রমুখ।