তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের নির্যাতন, বঞ্চনা ও অবহেলার কারণে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতা লাভ করে বাংলাদেশ। ওই সময়ে বাংলাদেশ থেকে সম্পদ নিয়ে যাওয়ার ফলে বাংলাদেশের চেয়ে অর্থনীতিতে অনেক এগিয়ে ছিল পাকিস্তান। কিন্তু ৫০ বছর পর বাংলাদেশের অর্থনীতির চেয়ে অনেক পিছিয়ে পাকিস্তান।
বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় আগামী বছর পাকিস্তানের দ্বিগুণ ২ হাজার ৭২০ ডলার হবে। অন্যদিকে পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৪৩০ ডলার হবে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে লন্ডন ভিত্তিক গণমাধ্যম ‘দি ইকোনমিস্ট’।
দি ইকোনমিস্টের ‘দি ওয়ার্ল্ড এহেড ২০২৩’ প্রতিবেদনের প্রক্ষেপণে বলা হয়, আগামী বছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ, যা পৃথিবীর বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
প্রতিবেদনে চারটি বিষয়ের উল্লেখ করা হয়, যা প্রতিটি দেশের ওপর প্রভাব রাখবে। সেগুলো হচ্ছে, চলমান সংঘাতের প্রভাব, মূল্যস্ফীতি মোকাবিলার প্রচেষ্টা, জ্বালানি ও খাদ্যবাজারে অস্থিরতা এবং চীনের অনিশ্চিত অগ্রযাত্রা।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশসহ ২০টিরও বেশি দেশের সূচকের ওপর প্রক্ষেপণ দেওয়া হয়। বলা হয়েছে মূল্যস্ফীতির দিক থেকে বাংলাদেশ কিছুটা চাপে থাকবে এবং মূল্যবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৩ শতাংশ। অন্যদিকে চীনে মূল্যস্ফীতি হবে ২ দশমিক ৯ শতাংশ, ভারতে ৫ দশমিক ২ শতাংশ এবং পাকিস্তানে ১১ দশমিক ৯ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে আগামী বছর বাজেট ঘাটতি ৪ দশমিক ৮ শতাংশ হবে বাংলাদেশে। প্রথা অনুযায়ী ৫ শতাংশ পর্যন্ত এই হার সহনীয় বলে ধরা হয়। অন্যদিকে চীনের বাজেট ঘাটতি দাঁড়াবে ৪ দশমিক ২ শতাংশ, ভারতের ৬ শতাংশ এবং ৫ দশমিক ৪ শতাংশ।
এদিকে ইকোনমিস্টের বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি প্রক্ষেপণ পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ইউরোপের প্রতিটি বড় অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হবে। এর মধ্যে রাশিয়ার নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ এবং জার্মানির শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ।
এশিয়ার প্রায় প্রতিটি অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হবে। বড় অর্থনীতি ভারত ৫ শতাংশ, চীন ৪ দশমিক ৭ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়া ৪ দশমিক ১ শতাংশ, জাপান শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ এবং সৌদি আরব ৩ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র অর্থনীতি শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বাড়বে আগামী বছর।
ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী বছর তেলের ব্যারেল হবে ৮৭ ডলার, যা বর্তমানে ১০০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে।