বাংলাদেশিরা এসে আসামের সমাজ ও সংস্কৃতিকে বিপন্ন করছে বলে মন্তব্য করেছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তার দাবি, বাংলাদেশ থেকে আসা পর্যটকরা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এই রাজ্যের সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্য বিপদ ডেকে আনছেন।
ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় কর্ণাটক রাজ্যে একটি অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এই মন্তব্য করেন।
ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইয়ের বরাত দিয়ে শুক্রবার (১৭ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম জি নিউজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার কর্ণাটকের বেলগাভির শিবাজি মহারাজ গার্ডেনে ‘শিব চরিত’ নামক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। সেখানে তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশ থেকে (আসামে) যাওয়া ব্যক্তিরা উত্তর-পূর্ব ভারতের এই রাজ্যটির সভ্যতা ও সংস্কৃতির জন্য বিপদ ডেকে আনছেন।
আগামী কিছুদিনের মধ্যেই কর্ণাটকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। অনুষ্ঠানে আসামের এই মুখ্যমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, তিনি তার রাজ্যে এখন পর্যন্ত ৬০০ মাদ্রাসা বন্ধ করে দিয়েছেন এবং বাকি সব মাদ্রাসাও তিনি বন্ধ করে দিতে চান। কারণ তিনি মাদ্রাসার চেয়ে স্কুল, কলেজ এবং এই ধরনের প্রতিষ্ঠান পছন্দ করেন।
বার্তাসংস্থা এএনআই জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ‘বাংলাদেশের লোকেরা আসামে ভ্রমণ করে এবং আমাদের সংস্কৃতি ও সমাজকে বিপন্ন করে। আমরা মাদ্রাসা চাই না, তাই আমি তাদের মধ্যে ৬০০টি বন্ধ করে দিয়েছি এবং বাকি সবগুলো বন্ধ করার পরিকল্পনা করেছি। আমরা স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় চাই।’
জি নিউজ বলছে, রাজ্যের সব মাদ্রাসা বন্ধ করে দিয়ে সেগুলোকে নিয়মিত স্কুলে পরিণত করার বিষয়ে আসাম সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা গুয়াহাটি হাইকোর্ট বহাল রেখেছে। অবশ্য হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছে আসামের একাধিক মাদ্রাসা সংগঠন।
তবে আসাম রাজ্যের প্রশাসনের নেওয়া এই উদ্যোগে বাধা দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। আর তাই হিমন্ত প্রশাসন মাদ্রাসাগুলোকে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে নিয়মিত সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সংবাদমাধ্যম বলছে, আসাম সরকার রাজ্যের সমস্ত মাদ্রাসাকে সাধারণ স্কুলে পরিণত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কারণ তারা বিশ্বাস করে, শিক্ষা ধর্মনিরপেক্ষ হওয়া উচিত।
হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জোর দিয়ে বলেছেন, গত বছর আল কায়েদার সাথে সম্পর্কযুক্ত বাংলাদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর সাথে সংযোগ রয়েছে এমন পাঁচটি ‘জিহাদি’ ইউনিট আবিষ্কৃত হওয়ার পরে আসাম ‘জিহাদি কার্যকলাপের’ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল।
তার দাবি, গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুসারে- ২০১৬ সাল থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে অন্তত ছয়জন এবিটি সদস্য অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিল। আসামের স্থানীয় যুবকদের ‘জিহাদি’ মতবাদে প্ররোচিত করে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এবং স্লিপার সেল প্রতিষ্ঠা করার জন্যই তারা ভারতে ঢুকেছিল।