বন্যার প্রভাবে পর্যটক কম, বিপাকে ব্যবসায়ীরা

প্রতি বছরের অন্যান্য ঈদে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকত সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত পর্যটনকেন্দ্র জাফলং। তবে এ বছরের পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটির তৃতীয় দিনেও নেই আশানুরূপ পর্যটক। পর্যটক কম রয়েছে উপজেলার অন্য দুই পর্যটনকেন্দ্র বিছনাকান্দি ও রাতারগুলেও।

গত দুই বছর ঈদে মহামারি করোনার কারণে পর্যটনকেন্দ্রগুলো বন্ধ ছিল। এরপর বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু করোনার ধকল কাটিয়ে উঠার আগেই এ বছর হানা দেয় বন্যা। বন্যার কারণে ঈদের আগে থেকেই স্পটগুলোতে ছিল সুনশান নীরবতা। বর্তমানে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও পর্যটকের সংখ্যা সীমিত।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদের তৃতীয় দিন মঙ্গলবার (১২ জুলাই) দুপুর থেকে পর্যটনকেন্দ্র জাফলং, বিছনাকান্দি ও রাতারগুলে পর্যটকের সংখ্যা কম ছিল। কয়েকটি স্পটে কিছু পর্যটকের দেখা মিললেও তারা স্থানীয় পর্যটক। এখানকার হোটেল-রিসোর্টের বেশিরভাগই ফাঁকা রয়েছে। বিশাল প্রস্তুতি নিয়ে রাখা পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা কাঙ্ক্ষিত পর্যটক না আসায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন, ভয়াবহ বন্যার প্রভাব পড়েছে স্পটগুলোতে। বন্যার পর থেকেই এখানে পর্যটক একেবারেই কমে গেছে। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। তাই যাতে পর্যটকরা নির্বিঘ্নে ঘুরতে আসেন সেই আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

জাফলং ফটোগ্রাফার সমিতির সহ-সভাপতি সুলতান রাজা বলেন, পর্যটক কম থাকায় ফটোগ্রাফাররা তেমন রোজগার করতে পারেছেন না। যারাই বেড়াতে এসেছেন বেশিরভাগই ছিলেন লোকাল পর্যটক।

কাপড় বিক্রেতা করিম আহমেদ বলেন, ঈদে ব্যবসা করার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু পর্যটক একেবারেই কম আসছেন। করোনা আর বন্যায় আমরা ব্যবসায়ীরা বিপাকে। আশা ছিল এবার ভালো বেচাকেনা হবে। কিন্তু হলো না। কাল থেকে হয়তো পর্যটক আরও বাড়তে পারে।

মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে জাফলংয়ে গিয়ে দেখা যায়, অন্যান্য বারের চাইতে এবার পর্যটক অনেক কম। সকালের দিকে পর্যটক না থাকলেও দুপুরের পর থেকে কিছু পর্যটক আসতে শুরু করেন। জাফলংয়ে বিকেল পর্যন্ত সহস্রাধিক পর্যটক বেড়াতে এসেছেন। যারা এসেছেন তারা স্বচ্ছ পানি, পাহাড়, পাথর আর ঝর্ণার সৌন্দর্য উপভোগ করছেন।

জাফলং টুরিস্ট পুলিশের ইনচার্জ (ওসি) মো. রতন শেখ জানান, বন্যার প্রভাবে এবারের ঈদে আশানুরূপ পর্যটক নেই জাফলংয়ে। যেহেতু বন্যার পানি একেবারেই কমে গেছে সেহেতু পর্যটকরা আসতে পারেন। তাই কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিক বিবেচনা করে ট্যুরিস্ট পুলিশ ঈদের দিন থেকেই দায়িত্ব পালন করছে।