বন্যার ক্ষত সুনামগঞ্জের দুই হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে

সুনামগঞ্জে বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কবলে পড়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। এছাড়া সিলেট অঞ্চলে হয়ে যাওয়া স্মরণকালের এই ভয়াবহ বন্যার কারণে পেছানো হয়েছে এসএসসি ও জেএসসি পরীক্ষা।

বন্যা চলাকালীন পানিতে দুই সপ্তাহের অধিক সময় ডুবে ছিল সুনামগঞ্জ জেলার প্রায় প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায় পাঠদান। এ সময় আসবাবপত্র, ফার্নিচার, পাঠ্যবই, গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রসহ বন্যার পানিতে ডুবে জেলার শিক্ষাখাতে ক্ষয়ক্ষতি দুই কোটি টাকা ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

অন্যদিকে জেলার বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর বইপত্রসহ শিক্ষার সরঞ্জাম পানিতে নষ্ট হওয়ায় অনিশ্চয়তায় স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা। বন্যায় নষ্ট হওয়ায় শিক্ষা উপকরণ সরবরাহের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংস্কারের সরকার সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবক মহল।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলার ১৪৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যায় আক্রান্ত হয়। প্রায় সব প্রতিষ্ঠানের আসবাবপত্র, ফার্নিচার ও নথিপত্রের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ক্ষতির পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এস এস আব্দুর রহমান। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকাসহ চাহিদাপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় সুনামগঞ্জের ২৩৩টি মাধ্যমিক স্কুল, ৯২টি মাদরাসা ও ৩৩টি কলেজ আক্রান্ত হয়েছে। অবকাঠামো, ফার্নিচার আসবাবপত্রের শেখ রাসেল ল্যাবের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ও সরঞ্জামের ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানিতে অনেক শিক্ষার্থীর বই নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে মন্ত্রণালয়ে ৫০ হাজার নতুন বইয়ের চাহিদা পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।

তিনি বলেন, এবারের বন্যায় শিক্ষাখাতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। বন্যার কারণে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা পেছানো হয়েছে। পরীক্ষা কবে নেওয়া হবে এমন নির্দেশনা এখনও আমাদের কাছে আসেনি। এমন অবস্থায় শিক্ষার্থীরা অনিশ্চয়তায় রয়েছে।

অভিভাবক মহল বলছেন, করোনাকালের পর বন্যায় শিক্ষা খাতের যে ক্ষতি হয়েছে, তা সামাল দেওয়া কঠিন। যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার করে পাঠদান সচল করার পাশাপাশি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিশেষ নজর দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।