বন্যার্তদের নিয়ে অপরাজনীতি করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের

বন্যার্তদের নিয়ে বিএনপি অপরাজনীতি করছে বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন, দুর্যোগপূর্ণ এই সময়ে দেশের সকল মানুষের উচিত দুর্যোগ কবলিত মানুষের পাশে থাকা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বন্যার্তদের নিয়ে বিএনপি অপরাজনীতি শুরু করেছে। দুর্গত মানুষকে নিয়ে পরিহাস করছে।

রবিবার এক বিবৃতিতে একথা বলেন ওবায়দুল কাদের। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামসহ বিএনপি নেতারা মানুষের দুর্ভোগের রাজনীতি করছে উল্লেখ করে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান সরকারের এই মন্ত্রী।

বিবৃতিতে কাদের বলেন, ‘দেশের মানুষ যখন প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্যার কারণে বেঁচে থাকার সংগ্রামে লিপ্ত। ঠিক এই সময়েই মির্জা ফখরুলের হীন রাজনৈতিক আচরণ অত্যন্ত দুঃখজনক। বিএনপির আচরণ খুব অমানবিক।’

‘অতীতে কোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো ধরনের প্রচেষ্টা ও উদ্যোগ জনগণ দেখেনি। শুধুমাত্র বিএনপি নেতারা লিপ সার্ভিসের মাধ্যমে মানুষের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে মিথ্যাচারের রাজনীতি করেন।’

বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে বন্যার কারণে মানুষের জানমাল রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশে দুর্যোগ মোকাবিলায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, কোস্টগার্ডসহ স্থানীয় প্রশাসন মানুষের কষ্ট লাঘবে সর্বাত্মক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

এ বিষয়টি উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যার্তদের জন্য ৬০০ আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে হাজার হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। যেকোনো প্রয়োজনে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী টোল ফ্রি নম্বর চালু করেছে।’

‘বানভাসি মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় ইমার্জেন্সি কন্ট্রোল রুম চালু করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। পাশাপাশি পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে মনিটরিং টিম ও মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।’

সড়ক ও সেতুমন্ত্রী জানান, সরকারের উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতার পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাও উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। পানিবন্দী মানুষের মাঝে শুকনো খাবার, পানি, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, প্রয়োজনীয় ঔষধ ও স্যালাইনের পাশাপাশি রান্না করা খাবারও বিতরণ করছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দ।

তিনি বলেন, ‘বন্যার পানি দ্রুত নামিয়ে যাতে মানুষের কষ্ট লাঘব করা যায় সেদিকেও সজাগ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। কোনো রাস্তার কারণে পানি নামতে বাধা পেলে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী সেই রাস্তা কেটে ফেলার নির্দেশ প্রদান করেছেন। বন্যার পানি নেমে গেলে এই তৎপরতা আরও জোরদার করা হবে।’

‘সিলেটের বন্যা কোনো মানবসৃষ্ট দুর্যোগ নয় এটি একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকার অতীতের যেকোনো সরকারের চেয়ে সফলতা অর্জন করেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সফলতা বিশ্বসভায় প্রশংসিত হয়েছে।’

ওবায়দুল কাদের আশা প্রকাশ করে বিবৃতিতে বলেন, ‘সরকারের প্রতি কোনো রকম বিষেদগার বা দোষারোপ না করে, এই দুর্যোগের সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা দুর্গতদের পাশে দাঁড়াবে। বিএনপি নেতৃবৃন্দকে অনুরোধ জানাচ্ছি অন্তত এই দুর্যোগকে পুঁজি করে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ থেকে বিরত থাকুন।’