বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার পেলেন সিলেটের প্রযুক্তিবিদ বাবলা

কৃষি গবেষণার মাধ্যমে নতুন নতুন কৃষি যন্ত্রপাতির উদ্ভাবনের স্বীকৃতিস্বরূপ বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার পেয়েছেন সিলেটের কৃতি সন্তান প্রযুক্তিবিদ আব্দুল হাই আজাদ বাবলা।

তিনি সিলেট নগরীর ২৬নং ওয়ার্ডের ভার্থখলাস্থ, ১৭-বি স্বর্ণালী নিবাসী মরহুম আব্দুল জহির ও মেহেরজান বেগমের ছেলে।

গেল ১২ অক্টোবর রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৫ ও ১৪২৬ বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের হাত থেকে তিনি এই পদক গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম, কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মতিয়া চৌধুরী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম।

পুরস্কার পেয়ে প্রযুক্তিবিদ আব্দুল হাই আজাদ বাবলা বলেন, ‘কাজের স্বীকৃতি পাওয়া যে-কারো জন্য গর্ব ও আনন্দের। আমাকে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। এই পুরস্কার আমাকে আরও বেশি অনুপ্রাণিত করবে।’

বুধবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এই রৌপ্যপদক পদক প্রদান করেন। ইতিমধ্যে আরো ৩ বার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন।

উল্লেখ্য, আব্দুল হাই আজাদ বাবলা জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যাদুঘরের প্রশিক্ষিত একজন কৃষি প্রযুক্তিবিদ। তিনি বিভিন্ন প্রকার কৃষি যন্ত্রপাতি, স্থানীয় বিলুপ্তপ্রায় ফল ও সবজির জাত সংরক্ষণে গবেষণা ও উদ্ভাবন করে থাকেন। তিনি ১৪২৬ বঙ্গাব্দের কোকোডাস্ট তৈরির যন্ত্র, হস্তচালিত ভুট্টা মাড়াই যন্ত্র, হস্তচালিত ৩ সারির ধান রোপণ যন্ত্র, লাগসই প্রযুক্তির পিভিসি পাইপের থ্রেড কাটার যন্ত্র এবং স্বল্প ব্যযের ডাস্টবিন পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। তাঁর উদ্ভাবিত হস্তচালিত ভুট্টা মাড়াই যন্ত্রের মূল্য মাত্র ১৫০০ টাকা। তাছাড়া তাঁর উদ্ভাবিত বিদ্যুৎ চালিত ভুট্টা মাড়াই যান্ত্রের মূল্য ৪৫০০ টাকা এবং পরিবেশ দূষণ রোধে উদ্ভাবিত অস্থায়ী ডাস্টবিন এর মূল্য মাত্র ২০০ টাকা। তাঁর উদ্ভাবিত হস্তচালিত ৩ সারির ধান রোপন যন্ত্র এখনো মাঠ পর্যায়ে গবেষণাধীন। তাছাড়া তিনি সিলেট অঞ্চলে বিলুপ্ত সবজি/ ফল চিনা, মনফল, এক্সকট, কোয়াস (শিতালাউ), কুছা, কামরাঙ্গা সীম ইত্যাদি সম্প্রসারণে লক্ষ্যে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করছেন।

কৃষি প্রযুক্তিবিদ আব্দুল হাই আজাদ বাবলা আক্ষেপ করে বলেন, বয়স এখন প্রায় ৬৫ বছর। কিছুদিন পূর্বে ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ায় শরীর অনেক দুর্বল হয়ে গেছে। কৃষি যন্ত্রপাতির একটি ওয়ার্কশপ স্থাপন করে কৃষক পর্যায়ে লাগসই প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি ব্যাপকভাবে পৌছে দেয়ার স্বপ্নের বাস্তবায়ন দেখে যেতে চান তিনি।