সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করায় দণ্ডপ্রাপ্ত সেই ৫৭ বাংলাদেশিকে ক্ষমা করে দিয়ে তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে দেশটি। দেশটির রাষ্ট্রপতি শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান নিজেই ওই ঘোষণা দেন।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমের সম্পাদকদের সঙ্গে এক বৈঠকে এ কথা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এসময় তিনি জানান, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতের আদালতে দোষী সাব্যস্ত ৫৭ জন বাংলাদেশিকে আজ দেশটির রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করে দিয়েছেন। শিগগিরই তাদের বাংলাদেশে পাঠানো হবে।’
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত জুলাইয়ে আমিরাতের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভে জড়িত বাংলাদেশি নাগরিকদের ক্ষমা করে দিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট। এর মধ্যে কারাদণ্ডপ্রাপ্তদের শাস্তি বাতিল করা হয়েছে বলেও জানায় সংবাদমাধ্যমটি।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুমতি ছাড়া যেকোনো ধরনের বিক্ষোভ নিষিদ্ধ। বাংলাদেশে আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ওই বিক্ষোভ করেন বলে খালিজ টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, ওই বিক্ষোভের পরদিন শনিবার (২০ জুলাই) আবুধাবিতে বাংলাদেশ দূতাবাস ও দুবাইয়ে অবস্থিত বাংলাদেশের কনস্যুলেট জেনারেল বিবৃতি দিয়ে প্রবাসীদের এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসকারী সব প্রবাসী বাংলাদেশিকে স্থানীয় আইন ও বিধিবিধান মেনে চলতে অনুরোধ করা হচ্ছে। সবার জেনে রাখা ভালো, এই দেশের আইন অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষগুলোর পূর্ব অনুমতি ছাড়া কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ করা বা স্লোগান দেওয়া নিষিদ্ধ। জনগণের মধ্যে অস্থিরতা, আতঙ্ক বা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে, এমন কোনো কাজ করা, গুজব বা অপপ্রচার চালানো কিংবা এই ধরনের কোনো বক্তব্য, ছবি বা ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করা এই দেশে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
আরও বলা হয়, কেউ উল্লিখিত কাজগুলো করলে তাকে কঠিন শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে। তার ভিসা বাতিল হয়ে যেতে পারে, জেল-জরিমানা হতে পারে, তাঁকে আমিরাত থেকে ফেরত পাঠানো হতে পারে বা ভবিষ্যতে তার আমিরাতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হতে পারে।
প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করায় ৫৭ জন বাংলাদেশিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন দেশটির একটি আদালত। তাদের মধ্যে তিনজনকে যাবজ্জীবন, ৫৩ জনকে ১০ বছর এবং বাকি একজনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।