কোনো নাটক মঞ্চস্থ হওয়ার আগে অনেক রিহার্সাল হয়। কিন্তু চূড়ান্ত মঞ্চস্থ হওয়ার আগে একটা শেষ রিহার্সাল হয়ে থাকে। যেখানে ত্রুটি-বিচ্যুতি কোনো কিছু থেকে থাকলে তা সেরে নেওয়া হয়, যাতে করে নাটক মঞ্চস্থ হওয়ার দিন কোনো রকমের সমস্যা না হয়।
এবারের এশিয়া কাপের ফাইনালও অনেকটা নাটকের রিহার্সালের মতো হয়ে উঠেছে। সুপার ফোরের প্রথম দুই ম্যাচই জিতে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা ফাইনাল নিশ্চিত করে নেয়। ফলে আজ নিজেদের বিপক্ষে পরস্পরের ম্যাচটি হয়ে উঠেছে শুধু আনুষ্ঠানিকতা। ১১ সেপ্টেম্বর ফাইনালে আগে নিজেদের ভালোভাবে পরখ করে নেওয়া। যাকে বলা যায় ফাইনালের আগে ড্রেস রিহার্সেল।
এই সমীকরণে পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার লাভ হলেও টুর্নামেন্টের আকর্ষণ কিন্তু অনেকটা কমে গেছে। এই কমে যাওয়ার কারণ সুপার ফোরের শেষ রাউন্ডের ম্যাচ দুটি শুধুই নিয়ম রক্ষায় পরিণত হয়েছে।
তারপরও বৃহস্পতিবার ভারত ও আফগানিস্তানের ম্যাচে ছিল আনন্দের রেনু। বিরাট কোহলির টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি অপরাজিত ১২২ রান, ভুবনেশ্বর কুমারের ক্যারিয়ারের সেরা ৪ রানে ৫ উইকেট, আসরের সর্বোচ্চ; দলগত রান ভারতের ২ উইকেটে ২১২ রান।
একটি নিয়ম রক্ষার ম্যাচে কতো কিছুই না ঘটে গেল! আজ শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তানের ফাইনালের আগে ড্রেস রিহার্সেল ম্যাচেও এ রকম কোনো কিছু ঘটে গেলে অবাক হওয়ার যাবে না। এশিয়া কাপের ফাইনালে পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা এ পর্যন্ত তিনবার মুখোমুখি হয়েছে। শ্রীলঙ্কা দুইবার, পাকিস্তান একবার চ্যাম্পিয়ন হয়। সব মিলিয়ে শ্রীলঙ্কা ৫ বার ও পাকিস্তান ২ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
ড্রেস রিহার্সালের মঞ্চে মুখোমুখি হওয়ার আগে দুই দেশ ২১ বার পরস্পরের বিপক্ষে খেলেছে। জয়ের পাল্লা পাকিস্তানেরই ভারী। তারা জিতেছে ১৩ বার। বাকি ৮ বার জিতেছে শ্রীলঙ্কা।
ফাইনালে উঠে আসার পথে দুই দলই কিন্তু আসর শুরু করেছিল নিজ নিজ গ্রুপে হার দিয়ে। পাকিস্তান চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছে ৫ উইকেটে ও শ্রীলঙ্কা আফগানিস্তানের কাছে বিধ্বস্ত হয়ে ৮ উইকেটে। এরপর দুই দলই ঘুরে দাঁড়ায়। গ্রুপ নিজ নিজ পরের ম্যাচে জিতে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে উঠে আসে সুপার ফোরে।
সুপার ফোরে আসার পরই দুই দলই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠে। দুই দলই গ্রুপ পর্বে হারের প্রতিশোধ নেয় পাকিস্তান ভারতকে ও শ্রীলঙ্কা আফগানিস্তানকে হারিয়ে। দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কা ভারতকে ও পাকিস্তান আসরের সেরা উত্তেজনাকর ম্যাচ উপহার দিয়ে আফগানিস্তানকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে। সুপার ফোরে অপরাজিত থাকা দল দুইটির একটিকে আজ অবশ্য হারের স্বাদ নিতে হবে।
এবারের আসরে এ পর্যন্ত দুই দলের হয়ে কম-বেশি সবাই পারফর্ম করলেও পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম এখনো নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। চারটি ম্যাচেই তিনি চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ। অথচ এই আসর তিনি খেলতে এসেছিল দারুণ ফর্মে থেকে। তার জন্য ফাইনালের আগে আজকের ম্যাচ ভালো একটি রিহার্সাল।