গাজীপুরে প্রেমের অভিনয় করে ব্ল্যাকমেল করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে র্যাব-১ গাজীপুর পোড়াবাড়ি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার এ এস এম মাঈদুল ইসলাম এতথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- মেহেদী হাসান সঞ্চয় (১৯), লিপি আক্তার স্বর্ণা (৩৮), লাভলী আক্তার (৩৯), আবু হানিফ (৩৪), বাদল মিয়া (৩৮) ও গোলাম রাব্বী (২০)।
র্যাব জানায়, সোমবার (২৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় প্রতারণার স্বীকার এক ভুক্তভোগীর ভাই র্যাব ক্যাম্পে এসে জানান, অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি ভিকটিমকে কৌশলে গাজীপুরের শ্রীপুরের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে আটক রাখেন। পরে মারধর করে তার কাছে থাকা সব কিছু ছিনিয়ে নেন। পরে তাকে ছেড়ে দিতে স্বজনদের কাছে এক লাখ টাকা দাবি করেন।
ওইদিন রাত সাড়ে ৯টায় র্যাবের একটি দল উপজেলার মুলাইদ মধ্যপাড়া গ্রামের টুটুলের ভাড়া বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে অশ্লীল ছবি ও গোপন ভিডিও ধারণের কাজে ব্যবহার করা সাতটি মোবাইল ফোন, নগদ টাকাসহ একটি লোহার পাত উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা জানান, তারা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। চক্রের নারী সদস্যরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মোবাইলে অপরিচিত নম্বরের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে প্রতারণার স্বীকার ব্যক্তিকে প্রলোভন দেখিয়ে বাসায় আনা হয়। পরে চক্রের অন্যান্য সদস্যরা ভুক্তভোগীকে আটকে রেখে অসামাজিক কার্যকলাপ হচ্ছে অভিযোগ এনে নগ্ন ভিডিও ধারণ করেন।
এরপর ওই ভিডিও তাদের পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে অথবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে ভয়ভীতি দেখিয়ে সঙ্গে থাকা নগদ টাকা, মোবাইলসহ অন্যান্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে ব্যক্তির আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে ১০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা দাবি করেন তারা। ওই টাকা বিকাশসহ অন্যান্য মাধ্যমে দেওয়ার পর চক্রটি ভুক্তভোগীকে ছেড়ে দেয়।
র্যাব আরও জানায়, লিপি আক্তারের মোবাইল ফোনে ১৫-২০ জনের আপত্তিকর ভিডিও পাওয়া গেছে। এছাড়া গত মার্চ থেকে এ পর্যন্ত তার ফোনে প্রায় বিভিন্ন ভিকটিমকে ফাঁদে ফেলানোর পরিকল্পনার ৪০০-৫০০ অডিও কল রেকর্ড পাওয়া গেছে। গত মার্চ মাস থেকে এ পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে অন্তত ২-৩ জনকে এভাবে জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নিতেন তারা।
র্যাব কর্মকর্তা মাঈদুল ইসলাম জানান, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।