প্রায় দুই মাস ধরে নিখোঁজ নবীগঞ্জের ফয়েজ

নিখোঁজ ফয়েজ ও অভিযুক্ত জাকির

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে ১ মাস ২৫ দিন অতিবাহিত হলেও এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি নিখোঁজ ফয়েজকে। তার বন্ধু প্রধান আসামি জাকিরসহ অন্য আসামিরা এখনও পলাতক। এ অবস্থায় নিখোঁজ ফয়েজের পরিবারে এক অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে। ফয়েজ বেঁচে আছে না কি অপহরণকারীরা তাকে হত্যা করে লাশ গুম করে রেখেছে- এ নিয়ে ফয়েজের মা, ভাই, বোনসহ আত্মীয়-স্বজনেরা দুশ্চিন্তায়।

জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের জিয়াপুর গ্রামের মৃত আরজু মিয়ার ছেলে মো. ফয়েজ আহমদ (২৩) ও বাদে রায়ঘর গ্রামের আতা মিয়ার ছেলে জাকির হোসেন (২৫) পরস্পরের বন্ধু। গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে মার্কুলি বাজারে যাওয়ার উদ্দেশে বের হন তারা দু’জন। সেদিন জাকির ফয়েজকে তার বোনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে নিয়ে যান বলে জানান ফয়েজের বড় ভাই কয়েছ আলী ইমন।

এদিকে রাত ১২টার দিকে জাকির তার বন্ধু ফয়েজের বড় ভাই কয়েছ আলী ইমনকে তার নিখোঁজের সংবাদ জানায়। পরদিন সকালে ফয়েজের বন্ধু জাকির মোবাইল ফোনে আবার বলে, ‘ফয়েজকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তোমরা মার্কুলি, রতনপুরে আসো। আমি হাওরে আছি।’

জাকিরের দেওয়া তথ্যমতে তাৎক্ষণিক সেখানে গিয়ে ফয়েজের জুতা জোড়া ও মোটরসাইকেল পাওয়া যায় একটি বাড়িতে। কিন্তু ফয়েজকে পাওয়া যায়নি। এরপর জাকির হোসেন তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যান। বানিয়াচং থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল মার্কুলি বাজারের একটি ডোবা থেকে ফয়েজের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে। এর পরপরই ফয়েজের বন্ধু জাকির আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় ও তার সন্দেহজনক আচরণে পুলিশ জাকিরকে হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকে। তবে জাকির ও তার সহযোগীদের এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

এদিকে জাকিরের ভিন্ন ভিন্ন তথ্য ও লুকোচুরি খেলায় ফয়েজের পরিবার সন্দেহ করছে টাকা অথবা অদৃশ্য কোনো কারণে ফয়েজকে জাকির তার লোকজনের সহযোগিতায় অপহরণ করে হত্যা ও গুম করেছেন। এ ঘটনার পর তাৎক্ষণিক নবীগঞ্জ থানায় একটি জিডি করেছেন ফয়েজের ভাই কয়েছ আলী ইমন।

এ ঘটনায় অনেক জল্পনা-কল্পনা ও অজানা আতঙ্কের একপর্যায়ে গত ২৮ অক্টোবর নিখোঁজ ফয়েজ আহমেদের মা, জিয়াপুর গ্রামের মৃত আরজু মিয়ার স্ত্রী খাদেজা বেগম বাদী হয়ে হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নবীগঞ্জের জাকির হোসেনসহ চারজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি এফআইআর গণ্যে নবীগঞ্জ থানার পুলিশকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।

নবীগঞ্জ থানার পুলিশ তদন্ত করে আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে এবং নিখোঁজ ফয়েজ আহমেদকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই গৌতম সরকার।