রাজধানীর উত্তরায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের গার্ডার ছিটকে প্রাইভেট কারের উপর পড়লে ভেতরে থাকা পাঁচ আরোহী মারা গেছেন। এছাড়া দুইজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজন নারী ও দুটি শিশু রয়েছে।
সোমবার (১৫ আগস্ট) বিকেল জসীম উদ্দীন মোড়ে প্যারাডাইজ টাওয়ারের সামনের সড়কে বাস র্যাপিড ট্রানজিট বা বিআরটি প্রকল্পের নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের গার্ডার ছিটকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উত্তরার পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম।
উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক (অপারেশন) পার্থ প্রতিম ব্রহ্মচারী বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে আছি। গাড়ি থেকে দুইজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। ভেতরে আরও মানুষ থাকার আশঙ্কা করছি।’
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ‘চারজনের লাশ গাড়ির ভেতরেই চাপা পড়ে রয়েছে। এ ছাড়া দুজনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের অবস্থা ভালো।’
যারা মারা গেছেন তাদের পুরো নাম পাওয়া যায়নি। এটুকু জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে আছেন ৫০ বছর বয়সী রুবেল, ২৮ বছর বয়সী ঝর্ণা, ৬ বছর বয়সী জান্নাত ও দুই বছর বয়সী জাকারিয়া।
যে দুই জনকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে, তারা হলেন ২৬ বছর বয়সী হৃদয় ও ২১ বছর বয়সী রিয়া মনি।
প্রাইভেট কারটি গাজীপুরে যাচ্ছিল বলে পুলিশের একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার দেওয়ান আজাদ হোসেন জানান, ‘ক্রেন দিয়ে হলো স্ল্যাব উঠানোর কাজ চলছিল। প্রাইভেট কার নিচ দিয়ে যাচ্ছিল। তখন সেটি ছিটকে গাড়ির ওপরে পড়ে যায়। আমাদের উদ্ধার অভিযান চলছে।’
এদিকে দুর্ঘটনার পর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে তীব্র যানজট তৈরি হয়েছে।
এর আগে গত ১৫ জুলাই গাজীপুরে একই প্রকল্পের ‘লঞ্চিং গার্ডার’ চাপায় এক নিরাপত্তারক্ষী নিহত হন। এ দুর্ঘটনায় এক শ্রমিক ও একজন পথচারী আহত হন।
ফ্লাইওভার নির্মাণের সময় ঢাকার তেজগাঁও ও মালিবাগ মোড় এবং চট্টগ্রামেও প্রাণহানি হয়েছে। এর মধ্যে ২০১২ সালে চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে ফ্লাইওভারের গার্ডার পড়ে ২৯ জনের প্রাণহানি হয়। এসব ঘটনায় কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা গণমাধ্যমে আসেনি।
২০১২ সালে বিআরটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। শেষ করার কথা ২০১৭ সালে। তবে নানা জটিলতায় বারবার পিছিয়েছে কাজ। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ শেষ হয়েছে ৬৮ শতাংশ। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এই কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।