প্রযুক্তির সহায়তায় হাওরে ৮০ শতাংশ ধান কাটা শেষ

কৃষিতেও প্রযুক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। যার ফলে ডিজিটাল সুবিধা নিতে পারছেন কৃষকেরা। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরও এর বাইরে নয়।

প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে হাওরে শ্রমিক সংকট থাকা সত্ত্বেও দুই সপ্তাহের মধ্যেই ৮০ শতাংশ ধান কাটতে সক্ষম হয়েছেন জগন্নাথপুরের কৃষকেরা।

উপজেলার বেশ কয়েকটি হাওর ঘুরে দেখা গেছে, হাওরে ধান কাটার তেমন বাকি নেই। হাওরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ধান কাটার পাশাপাশি গোখাদ্য বাড়িতে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তবে নলুয়া ও মই হাওরের কিছু জায়গায় ধান কর্তন বাকি থাকতে দেখা গেছে।

এছাড়া উপজেলার বড় ৮টি হাওরের মধ্যে কোনো হাওরেই বোরো ধান কর্তনের বেশি বাকি নেই। বৈশাখের শুরু থেকেই আবহাওয়া পরিস্থিতি অনেকটা কৃষকদের অনুকূলে থাকায় খুব অল্প সময়েই সোনার ফসল গোলায় তুলতে পারছেন কৃষকরা।

জানা যায়, প্রতিবছরের মতো এ বছরও ৮০ শতাংশ ভর্তুকি মূল্যে সরকারের দেওয়া ছোট-বড় ২০টি ধান কাটার হারভেস্টার ও রিপার মেশিন দিন-রাতে হাওরে ধান কাটার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেজন্য শ্রমিক সংকট উপজেলার কৃষকদের সামনে মাধা হতে পারেনি। হারভেস্টার মেশিনে ধান কেটে সঙ্গে সঙ্গে মাড়াই করে একেবারে খড়কুটো পরিষ্কার করে দিয়েছে। এতে কৃষকদের কম সময়ে ধান তোলার সঙ্গে সঙ্গে আর্থিকভাবেও সাশ্রয় হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন, আমাদের উপজেলায় ৯৫ শতাংশ ধান কাটা শেষ। বড় হাওর ছাড়া ছোট (নন) হাওরে কিছু ধান রয়ে গেছে। এগুলো প্রজেক্টের আওতায় দুই ফসলি জমি হওয়ায় ধান পরিপক্ব হতে দেরি হয়।

বৃহত্তর নলুয়ার হাওরের কৃষক জমির উদ্দিন বলেন, এ বছর আমি প্রায় ১০০ কেদার জমিতে ধান চাষ করেছি। এবার ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ধান কাটা এখনও শেষ হয়নি।

তিনি বলেন, আবহাওয়া ভালো থাকায় ও হারভেস্টার মেশিনের সার্বিক সহযোগিতায় খুব কম সময়েই ধান কাটতে পারছি। এই প্রযুক্তি সরকারের উন্নয়নের অন্যতম একটি অংশ।

জগন্নাথপুরের আরেক কৃষক অজিত বৈদ্য বলেন, আমাদের এবার ব্রি ২৮ জাতের ধান একটুও হয়নি। আমাদের কৃষকরা ফসল পায়নি। তবে বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে।

জগন্নাথপুর কৃষি কার্যালয়ের উপ-সহকারী সংরক্ষণ কর্মকতা তপন চন্দ্র শীল বলেন, উপজেলার হাওরে প্রায় ৮৬ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আর দুই-তিন দিনে কৃষকরা শতভাগ ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাউছার আহমেদ জানান, জগন্নাথপুর উপজেলায় এ বছর প্রায় ২০ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। হেক্টরপ্রতি গড় ফলন ৪.৮ মেট্রিক টন। এর আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ২৯২ কোটি টাকা।