প্রবাসী ট্র্যাজেডি : বাবা-ছেলের পর এবার মারা গেলেন মেয়ে

সিলেটের ওসমানীনগরে প্রবাসী পিতা-পুত্রের পর এবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন একই পরিবারের প্রবাসী মেয়ে সামিরা ইসলাম। এ নিয়ে একই পরিবারের তিন প্রবাসী মৃত্যুবরণ করলেন।

ওসমানীনগরের তাজপুর ইউনিয়নে দুলিয়ারবন্দের একটি বাসায় গত ২৫ জুলাই রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে ৫ সদস্যের প্রবাসী পরিবার। পরদিন তাদেরকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে মারা যান পিতা রফিকুল ইসলাম ও পুত্র মাইকুল ইসলাম। ১২ দিনের ব্যবধানে শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাত ১টার দিকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাপসাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন মেয়ে সামিরা ইসলাম। এ নিয়ে একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু হলো।

ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাঈন উদ্দিন সামিরার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন।

উল্লেখ্য, গত ২৫ জুলাই রাতের খাবার খেয়ে ঘুমোতে যান প্রবাসী পরিবারের ৫ সদস্য। তারা হলেন- যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলাম (৫০), তার ছোট ছেলে মাহিকুল ইসলাম (১৮), রফিকুল ইসলামের স্ত্রী হুছনারা বেগম (৪৫), ছেলে সাদিকুল ইসলাম (২৫) ও সামিয়া ইসলাম (২০)। তাদের মধ্যে রফিকুল ইসলাম ও ছেলে মাইকুল ইসলাম পরদিন মারা যান। আশঙ্কাজনক অবস্থায় অন্যদের ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে মা-ছেলে সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরেন। কিন্তু ১১ দিনেও ফেরেনি সামিরার জ্ঞান। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বিষক্রিয়ায় সামিরার কিডনি, লিভার কাজ করছিল না।

তিন প্রিয়জনের মৃত্যুর যন্ত্রণায় এখন দিশেহারা মা হুছনারা বেগম ও ছেলে সাদিকুল ইসলাম।

স্থানীয়রা জানান, যুক্তরাজ্য থেকে গত ১২ জুলাই তারা দেশে আসেন। গত ১৮ জুলাই ওসমানীনগরের তাজপুরে ওই ফ্লাটের ২য় তলার একটি ইউনিট ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। মূলত ছেলের চিকিৎসার সুবিধার্থে বাসা ভাড়া করে তারা এখানে উঠেছিলেন। গত ২৬ জুলাই সকালে স্বজনরা ডাকাডাকি করলে প্রবাসী রফিকুল ইসলামসহ তার স্ত্রী-সন্তানরা ঘরের দরজা না খোলায় ৯৯৯ নম্বরে কল করা হয়। পরে বেলা ১টার দিকে পরিবারের ৫ সদস্যকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার পুলিশ। এ সময় তাদের হাসপাতালে নেওয়া হলে বাবা-ছেলের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।