সুনামগঞ্জ-৩ আসনের (শান্তিগঞ্জ-জগন্নাথপুর) সাবেক এমপি শাহিনুর পাশা চৌধুরীকে নিয়ে প্রচলিত কথা আছে, তিনি সিজনাল পলিটিশিয়ান। বিএনপিসহ স্থানীয় নেতাকর্মীদের অনেকেই মনে করেন নির্বাচন এলেই তিনি জনসম্মুখে এসে হাজির হন না হলে তার দেখা মেলা ভার।
এমন অবস্থায় হঠাৎ প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেেআবারও আলোচনায় সেই শাহিনুর পাশা চেধৈুরী। গুঞ্জণ ওঠে আওয়ামী লীগের সাথে আঁতাত করে নির্বাচনে আসছেন জমিয়তের এই কেন্দ্রীয় নেতা। ছবি ভাইরাল হওয়ার একদিন পরেই আজ শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) বিকালে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, দলের কিছু নেতাকর্মীকে দলের সিদ্ধান্ত ও অবস্থানের বিরুদ্ধে নির্বাচনে আসতে প্ররোচিত করা ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অভিযোগে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মাওলানা শাহিনুর পাশা চৌধুরীকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলীয় সকল পদ স্থগিত করেছেন।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি মাওলানা শায়খ জিয়াউদ্দিনের বরাত দিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন দলটির প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীন।
এদিকে শাহীনূর পাশার এমন দ্বিচারিতার কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তাঁরই ঘনিষ্ঠ কর্মী সমর্থকেরা। তারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও স্ট্যাটাস দিয়ে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। তারা বলছেন, কোনো ব্যক্তি দলের বাইরে গিয়ে নীতি-বহির্ভূত কাজ করলে তার দায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম নেবে না। কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে শাহিনুর পাশার সকল পদ স্থগিত করায় খুশি হয়েছেন অনেকে। খুশি বিএনপির নেতাকর্মীরাও।
মাহমুদুল হাসানের নামের একজন শাহিনুর পাশা চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে তার ফেসবুকে পোস্টে লিখেছেন, লোকটাকে এমনিতেই আমার অপছন্দ ছিল। আলেমদের মান-সম্মান নিয়ে এমন খেলা করা উনাদের মতো লোকেরই সাজে।
জমিয়তের আরেক নেতা মাও. খলিলুর রহমান তার ফেসবুকে লিখেছেন, শাহিনুর পাশা দালালি করবেন সেটা আমি আগেই বুঝতে পেরেছিলাম। তার সমালোচনা করায় কিছু কর্মী সমর্থকেরা আমার বিষোদগার করেছিলেন। তারা কি আমার চেয়েও বেশি বেইমান ও প্রতারক পাশাকে চিনতেন….?
সুনামগঞ্জ জেলা জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক মাও. তৈয়িবুর রহমান বলেন, একজন ব্যক্তি হিসেবে শাহিনুর পাশা প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতেই পারেন। আমি বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবেই দেখছি। তবে, দলের শৃঙ্খলার বাইরে যাওয়া কোনো ভাবেই উচিত নয়। যেহেতু দল করি, দলের সিদ্ধান্তের সাথে আমরা একমত।
যদিও বৃহস্পতিবার রাতেই এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে শাহিনূর পাশা দাবি করেন প্রধানমন্ত্রীর সাথে এটা তাঁর ব্যাক্তিগত সাক্ষাৎ। তিনি তাঁর ফেসবুক ওয়ালে লিখেন, গতরাতে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে ইসলামী ৯ টি দলের সাক্ষাতে জমিয়তের নামটিও মিডিয়ায় এসেছে। আর তাতে আমার শুভাকাঙ্ক্ষী এবং জমিয়ত প্রেমিদের মনে কষ্ট পেয়েছেন। এটা আমার প্রিয় দল জমিয়তের প্রতিনিধিত্ব নয়, সাক্ষাতকারটি আমার ব্যক্তিগত। যার সহযেগিতায় গিয়েছি, তিনিই আমাকে ১ দিন আগে বলেছেন, জমিয়ত নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল। সুতরাং ওখানে আমি জমিয়ত নেতা হিসেবে যাইনি। আমার মামলাগুলো উইথড্র করার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে গিয়েছিলাম। দেশের সুপ্রীম অথরিটির কাছে যে কেউ সুযোগ পেলে তার আবদার পেশ করার জন্য যাওয়ার অধিকার রয়েছে। এরপরেও যারা কষ্ট পেয়েছেন, আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।’