চা-বাগানের মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কী ঘোষণা দেন, সেটি জানতে মুখিয়ে রয়েছেন চা-শ্রমিকেরা। ১৯ দিন ধরে কর্মবিরতি পালন করা এই শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর ওপর তারা ভরসা রেখে তার ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছেন।
শনিবার (২৭ আগস্ট) বিকেল ৪টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বৈঠকটি হবে। প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস এ বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শনিবার (২৭ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক, সিদ্ধান্ত নিয়ে চা শ্রমিকদের প্রত্যাশা, আশাবাদ জানতে দেশের ৭টি ভ্যালীর চা শ্রমিক মুখপাত্রদের সাথে সিলেট ভয়েস থেকে যোগাযোগ করা হয়। কথা বলা হয় চট্টগ্রাম ভ্যালী, সিলেট ভ্যালী, লস্করপুর ভ্যালী, বালিশিরা ভ্যালী, লংলা ভ্যালী, মনু-ধলই ভ্যালী ও জুড়ি ভ্যালীর চা শ্রমিক মুখপাত্রদের সাথে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম ভ্যালী সাধারণ সম্পাদক যতন কর্মকারের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সিলেট ভয়েসকে জানান, আমরা আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে তাকিয়ে আছি। পুরো চা শ্রমিক আমাদের প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে আছেন। আমরা আশাবাদি যে জননেত্রী আজকে আমাদের জন্য একটা ন্যায্য মজুরি নির্ধারণ করে দেবেন।
সিলেট ভ্যালীর সাধারণ সম্পাদক দেবু বাউরি জানান, আমাদের শ্রমিকরা কিন্তু মজুরির বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকেই শুনতে চাচ্ছেন। তিনি যা বলবেন শ্রমিকরা তা মেনে নিয়েই কাজে ফিরে যাবেন। আমাদের বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রী আমাদের অসহায় চা শ্রমিকদের কথা চিন্তা করে আশানুরুপ একটা মজুরি নির্ধারণ করে দিবেন।
লস্করপুর ভ্যালীর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা অনিরুদ্ধ বাড়াইক জানান, আমরা আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মুখের কথা শোনার অপেক্ষায় আছি। তিনি আজকে যা সিদ্ধান্ত দেবেন সেটাই আমরা মেনে নেবো। তিনি বলামাত্র আমরা আবার কাজে ফিরে যাবো।
বালিশিরা ভ্যালীর সাংগঠনিক সম্পাদক কর্ণ তাঁতী জানান, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চা শ্রমিকদের দু:খ কষ্টের সব কথা জানেন। চা শ্রমিকরা কতটা ভুক্তভোগী, চা শ্রমিকদের জীবন সংগ্রামটা কেমন কোনকিছুই জননেত্রীর অজানা নয়। সেজন্য আমাদের চা শ্রমিকরা উনার মুখের কথা শোনার অপেক্ষায়। তিনি যা বলবেন সেটাই আমাদের চা শ্রমিকরা মেনে নেবেন। আমরা সেটা মেনে নেবো।
লংলা ভ্যালীর সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম জানান, আমরা প্রধানমন্ত্রীর মুখের বাণী শোনার অপেক্ষায়। তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটা মেনে নিয়ে আমাদের চা শ্রমিকরা কাজে ফিরে যাবেন।
মনু-ধলই ভ্যালীর সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাস পাইনকা জানান, আমরা আশা করছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চা শ্রমিকদের কথা চিন্তা করে একটা ভাল মজুরি নির্ধারণ করে দেবেন। তবে তিনি মজুরি হিসেবে যতটুকুই নির্ধারন করে দেন না কেন আমরা সেটা মেনে নেবো। কাজে ফিরে যাবো। এটা আমাদের চা শ্রমিকদেরও কথা।
জুড়ি ভ্যালীর সাধারণ সম্পাদক রতন তেলী জানান, চা শ্রমিকরা আশাবাদি যে তাদের এই আন্দোলনের ফলে একটা ভাল মজুরি আদায় করে কাজে ফিরতে পারবে। আমাদের চা শ্রমিকরা মনে করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব দিক বিবেচনা করে একটা মজুরি নির্ধারল করে দেবেন। শ্রমিকরা প্রধানমন্ত্রীর নির্ধারণ করে দেওয়া মজুরি নিয়েই কাজে ফিরে যেতে প্রস্তুত।
মজুরি বাড়ানোর দাবিতে গত ৯ আগস্ট থেকে আন্দোলনে নামেন চা-শ্রমিকরা। ১৩ আগস্ট থেকে শুরু হয় অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট। তবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার আশ্বাসে সোমবার (২২ আগস্ট) দুপুরে শ্রমিকদের একাংশ আন্দোলন প্রত্যাহার করে কাজে ফেরে। আরেক অংশ এখনো আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে।