দুর্গম পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তে নতুন একটি আন্তঃসীমান্ত সেতু চালু করেছে রাশিয়া ও চীন। শুক্রবার এই সেতু চালুর ফলে দুই দেশের বাণিজ্য আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের পর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে তা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে মস্কো। এরই মধ্যে চালু হয়েছে এই সেতু।
নতুন চালু হওয়া সেতুটি রাশিয়ার ব্লাগোভেশচেনস্কের সঙ্গে চীনের হেইয়ে শহরকে যুক্ত করবে। আমুর নদীর ওপর নির্মিত হয়েছে এটি। এক কিলোমিটারের কিছুটা বেশি দৈর্ঘ্যের এই সেতুটি ১৯০০ কোটি রুবল ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রুশ বার্তা সংস্থা আরআইএ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আতশবাজির প্রদর্শনীর পাশাপাশি দুই দেশের পতাকা এবং নানা রঙে সজ্জিত ট্রাক দুই লেনের সেতুটি দিয়ে এক দেশ থেকে অপর দেশে যাতায়াত করে।
রুশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ফেব্রুয়ারিতে মস্কো ও বেইজিং ‘সীমাহীন’ সহযোগিতার ঘোষণা দেওয়ার পর বাণিজ্য বাড়িয়ে এই সেতু মস্কো ও চীনকে আরও ঘনিষ্ঠ করে তুলবে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর আগে এই সহযোগিতার ঘোষণা দেন।
রাশিয়ার দুর্গম পূর্বে নিযুক্ত ক্রেমলিনের প্রতিনিধি ইয়ুরি ট্রাটনেভ বলেন, ‘আজকের বিভক্ত বিশ্বে, রাশিয়া ও চীনের মধ্যে ব্লাগোভেশচেনস্ক-হেইহে সেতু একটি বিশেষ প্রতীকী অর্থ বহন করে।’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী হু চুনহুয়া বলেছেন, ‘চীন রাশিয়ার সঙ্গে সব ক্ষেত্রে বাস্তব সহযোগিতা আরও গভীর করতে চায়’।
রাশিয়ার পরিবহন মন্ত্রী ভিটালি সাভেলিভ বলেন সেতুটি দ্বিপাক্ষিক বার্ষিক বাণিজ্য ১০ লাখ টনেরও বেশি পণ্যে উন্নীত করতে সহায়তা করবে।
রাশিয়ার পক্ষ থেকে সেতুটি নির্মাণের দায়িত্ব পায় বিটিএস-এমওএসটি নামে একটি প্রতিষ্ঠান। তারা জানিয়েছে, ২০১৬ সালে নির্মাণ শুরু হয়ে ২০২০ সালের মে মাসে শেষ হয়। তবে করোনাভাইরাস বিধিনিষেধের কারণে এর উদ্বোধনে বিলম্ব হয়।
বিটিএস-এমওএসটি জানিয়েছে, এই সেতুর ফলে চীনের পণ্য রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে পৌঁছাতে দূরত্ব কমাবে ১৫০০ কিলোমিটার। সেতুটি পার হতে যানবাহনকে আট হাজার সাতশ’ রুবল পরিশোধ করতে হবে। নির্মাণ খরচ উঠে যাওয়ার পর টোল খরচ কমবে বলে আশা প্রকাশ করেছে তারা।
রাশিয়া এপ্রিলে জানায় তারা চীনের সঙ্গে পণ্য প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে এবং বেইজিংয়ের সাথে ২০২৪ সালের মধ্যে দুইশ’ বিলিয়ন ডলারে বাণিজ্য করবে। রাশিয়ার প্রাকৃতিক সম্পদ এবং কৃষি পণ্যের বড় ক্রেতা চীন।
ইউক্রেনে রুশ পদক্ষেপের নিন্দা জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে চীন। এছাড়া মস্কোর ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানিয়ে আসছে বেইজিং।
সূত্র: রয়টার্স