চলমান বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা। ওই উপজেলার অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনো যায়নি ত্রাণ সহায়তা। পানি কমার পর মানুষজন বাড়িতে ফিরেছেন কিন্তু থাকছেন অনাহারে অর্ধাহারে। অনেকেরই থাকার জায়গাটুকুও নেই। ঘরের চালা, আসবাবপত্র সব পানিতে ভেসে গেছে। আমরা নৌকা নিয়ে পৌঁছাতেই মানুষজন দৌড়ে আসলেন। নিজেদের কষ্টের কথা বলে কান্না করিতেছিলেন। কথাগুলো বলে নিজেও কান্না করছিলেন সেচ্ছাসেবী চৌধুরী জান্নাত রাখি।
শুক্রবার (২৪ জুন) সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ৫নং উত্তর রানিখাই ও ৬নং রানিখাই ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে ত্রাণ বিতরণের সময় এমন হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখে আপ্লুত হন তিনি ।
সেচ্ছাসেবী চৌধুরী জান্নাত রাখি শুক্রবারে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ওই দুই ইউনিয়নের ফেদারগাও, পূবেরগড়, ফুরারপাড়, লামাডিস্কি, সামারাকান্দি, শান্তিপুর, পূর্ব ইসলামপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে। সেচ্ছাসেবীদের নিয়ে রাখি ওইসব গ্রামে ৫৭৬ প্যাকেট খিচুড়ি, ব ২০০ প্যাকেট বিস্কুট, ও প্রয়োজন অনুযায়ী চিড়া, মুড়ি, গুড়, দিয়াশলাই, স্যালাইন, পানি, কাঁঠাল বিতরণ করেন।
এসময় তাঁর সাথে উপস্থিত ছিলেন- স্বেচ্ছাসেবক আকাশ, সাব্বির, ইসমাইল, সিলেটের মাহফুজ, মিজান প্রমুখ।
চৌধুরী জান্নাত রাখি বলেন, আমরা যে গ্রামগুলোতে গিয়েছিলাম সেখানো এখনো কোনো ত্রাণ সহায়তা পৌঁছায়নি বলে জানান স্থানীয়রা। তাই আমি অনুরোধ করবো যারা ত্রাণ দিবেন তারা দয়া করে গ্রামের ভিতরে প্রবেশ করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ দিবেন। কারণ এখনো অনেক এলাকা আছে যেখানে কেউ ত্রাণ নিয়ে যায়নি। এসব এলাকায় মানুষের কষ্ট শুনলে আর তাদের দুর্ভোগ দেখলে চোখে পানি ধরে রাখা যায় না।
তিনি বলেন, আমি যে পরিমাণ খাবার নিয়ে গেছি, সেখানে গিয়ে মনে হয়েছে এই মানুষগুলোর জন্য খাবারগুলো পর্যাপ্ত না। তাদের জন্য আরও বড় ধরনের সহায়তা দরকার। মানুষের ঘর বাড়ি নেই। যার ঘরের সামান্য এখনো দৃশ্যমান আছে তার ঘুমানোর খাট নেই, রান্না করার পাতিল নেই, পরনের কাপড় নেই। শুধু নেই আর নেই। সিলেটের প্রতিটি বন্যার্ত এলাকায় মানুষজন এভাবে দুর্ভোগ করছেন। এসব মানুষদের জন্য শুধু সরকারের দিকে চেয়ে থাকলে হবে না। সমাজের বিত্তশালীসহ সকলকে নিজ নিজ জায়গা থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।