সাম্প্রতিক সময়ের ভয়াবহ বন্যায় শহরতলিসহ প্লাবিত হয় সিলেটের বিভিন্ন উপজেলা। লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে আশ্রয় নিয়েছেন সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে। যেখানে নারী পুরুষ ও শিশুসহ এলাকার লোকজন যতসামান্য জিনিসপত্র নিজের সাথে নিয়ে আসার সুযোগ পেয়েছেন। ফেলে এসেছেন ঘরবাড়ি ও জিনিসপত্র। যা ইতোমধ্যে বানের পানিতে বিলীন হয়ে গেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে একবেলা একমুঠো খাবার সংগ্রহ করা তাদের জন্য অসাধ্য।
এমন বাস্তবতায় পুলিশের আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম-বার, এর নির্দেশে মানুষের মুখে একবেলা আহার তুলে দিতে কাজ শুরু করেন সিলেট জেলার পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম।
যার তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. মাহফুজ আফজালের নেতৃত্বে জেলা পুলিশের একটি টিম জেলা পুলিশ লাইন্স হতে রান্না করা হাজারখানেক খিচুড়ীর প্যাকেট নিয়ে হাজির হয় কোম্পানীগঞ্জ থানাধীন ০৪ নং ইছাকলস ইউনিয়নের অন্তর্গত শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থাপিত অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে।
প্রকৃতির এমন রুদ্ররূপের মধ্যে শত প্রতিকূলতা ভেঙ্গে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে প্রায় আড়াইঘন্টা সময় লাগে। পরে তারা ইছাকলস ইউনিয়ন পরিষদের ০২ তলায় স্থাপিত অপর আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণ করেন।
বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় শুক্রবার থেকে কোম্পানীগঞ্জ থানা, গোয়াইনঘাট থানা এবং বিশ্বনাথ থানার সঙ্গে মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন ছিল। থানা এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকায় শুক্রবার জৈন্তাপুর এবং কানাইঘাট এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. মাহফুজ আফজাল, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট এলাকায় জেলা বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. লুৎফর রহমান স্বস্ব সার্কেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ পুলিশের উদ্ধারকারী টিমের নেতৃত্ব দিয়ে অনেক লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়েছেন।
শনিবার পুলিশ সুপার, সিলেট এর নির্দেশনা অনুযায়ী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুৎফর রহমান, সহকারি পুলিশ সুপার গোয়াইনঘাট সার্কেল প্রবাস কুমার সিংহ, এএসপি এসএ এফ শেখ মুত্তাজুল ইসলাম ইসলাম ও কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সকাল থেকে সারাদিন গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ থানা এলাকা থেকে বন্যার্তদের উদ্ধারপূর্বক নিরাপদে আশ্রয় কেন্দ্রে পৌছে দিয়েছেন।
এছাড়া জেলা পুলিশের পক্ষ হতে শুক্রবার এবং শনিবার (১৮ জুন) কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট এবং জৈন্তাপুর থানা এলাকায় বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী এবং খাবার বিতরণ করা হয়েছে।