প্রকৃতির ক্ষতি করে এমন প্রকল্প নেওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, হাওর, পানি, খাল-বিল, ছোট মাছ, ঘাস, লতাপাতা ও প্রকৃতির ডিস্টার্ব করে এমন প্রকল্প নেওয়া যাবে না। এগুলোর যেন ক্ষতি করা না হয়।
মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাককে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভা শেষে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, শুধু ফসল উৎপাদন করলেই হবে না। পাশাপাশি খাদ্যশস্যের গুণগতমান ঠিক রাখতে হবে। এমনভাবে মজুত করতে হবে যাতে খাদ্যশস্যের পুষ্টিগুণ ঠিক থাকে। প্রয়োজনে বিদেশি প্রযুক্তিও ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে পরিবেশের ক্ষতি করে যেকোনো কাজ না করতেও নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে যেন খালগুলো ভরাট না হয়ে যায়। যেকোনো প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় ঢাকার খালগুলো ঠিক রাখতে হবে। এছাড়া প্রকল্পে অহেতুক ভূমি অধিগ্রহণ না করতেও নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এর বাইরে প্রকল্পের বারবার মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়টিতে নজর রাখতে হবে।
কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারকরণ প্রকল্পের আওতায় হাওর ও চর এলাকায় ফসল উৎপাদনে জোর দিচ্ছে সরকার। এজন্য মঙ্গলবার প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় ১৫৪ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বারটান) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৭ সালের সেপ্টেম্বর মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো, পুষ্টিমান ও খাদ্য নিরাপত্তা বিবেচনায় সুনির্দিষ্ট ফসলের উৎপাদনশীলতা ৮ থেকে ১০ শতাংশ বৃদ্ধি করা। নিরাপদ ও পুষ্টিসমৃদ্ধ ফসল গ্রাম সৃজনের মাধ্যমে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জনে অবদান রাখা।
৪৯ জেলার ১৫৫টি উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্প এলাকার গড় শস্যের নিবিড়তা বাড়ানো হবে। প্রকল্প এলাকায় খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জনের লক্ষ্যে বায়ো-ফর্টিফাইড ফসল আবাদ সম্প্রসারণ, উচ্চমূল্যের ফসল আবাদ সম্প্রসারণ, উন্নত কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ, গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে উদ্ভাবিত জাত/প্রযুক্তি সম্প্রসারণ, নিরাপদ ফসল উৎপাদন বাড়বে।