মঙ্গলে মানুষের বসতি কেমন হবে- তার একটি প্রতিরূপ (সিম্যুলেশন) পৃথিবীতেই তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। পরীক্ষা-নিরীক্ষা সংক্রান্ত প্রয়োজনে এক বছর স্বেচ্ছাসেবীরা লাল গ্রহে ভবিষ্যতে মানুষ কীভাবে মানিয়ে নেবে সে বিষয় নিশ্চিত করতে অবস্থান করবেন।
টেক্সাসের হিউস্টোনে নাসার বড় গবেষণাকেন্দ্রে ক্রু হেলথ অ্যান্ড পারফরমেন্স এক্সপ্লোরেশন অ্যানালগ (চ্যাপিয়া) প্রকল্পে তিনটি মঙ্গলের বাসস্থানের প্রতিরূপের মধ্যে ‘মার্স ডুন আলফা’ নামের একটি প্রতিরূপের নাসা বেশ কয়েকটি ছবি অনলাইনে প্রকাশ করেছে।
চারজন স্বেচ্ছাসেবী চ্যাপিয়াতে প্রবেশ করবেন প্রথম ধাপে চলতি গ্রীষ্মেই এবং সেখানে এক বছর থাকবেন। দীর্ঘ সময় বাইরের মানুষের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন থাকার ফলে তাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যে কী ধরনের পরিবর্তন আসে দেখতে চাইছে নাসা। দীর্ঘ মানব যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা তাদের মনোবলে প্রভাব ফেলতে পারে কিনা তা তারা বুঝতে পারবেন।
গবেষক গ্রেস ডগলাস বলেছেন, মঙ্গলে নভোচারীদের সম্পদ ব্যবহারের প্রক্রিয়া তারা আরো ভালোভাবে বুঝতে পারবেন ডেটার মাধ্যমে। কারণ এ ধরনের দূরবর্তী মিশন খুব কঠোর ভর সীমাবদ্ধতা থাকে। ফলে সম্পদ থাকে সীমিত।
এক হাজার ৭০০ বর্গফুটের মার্স ডুন আলফা নামের বাড়িটিতে অবস্থান করবেন স্বেচ্ছাসেবকরা। যেখানে সালাদ চাষের জন্য থাকবে খামার, বিশ্রামের জন্য একটি জোন, চিকিৎসার কক্ষ ও বেশ কয়েকটি ওয়ার্ক স্টেশন ও দুটি বাথরুম থাকবে। ট্রেড মিলে স্বেচ্ছাসেবীরা দৌঁড়াতে পারবেন ও খামারটিতে থাকবে গ্রিন হাউস।
স্বেচ্ছাসেবী ক্রুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন গবেষকরা নিয়মিত চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে। যেমন প্রয়োজনীয় সরঞ্জামে ঘাটতি দেখা গেলে বা পানি সরবরাহ কমে গেলে, স্বেচ্ছাসেবী ক্রুদের প্রতিক্রিয়াও পর্যবেক্ষণ করবেন গবেষকরা। এটি থ্রিডি প্রিন্টেড এই বাসস্থানের আরেকটি মূল বৈশিষ্ট্য। গবেষক ডগলাস জানিয়েছেন, নাসা অন্যান্য গ্রহ ও চন্দ্রপৃষ্ঠে মানববসতি তৈরির প্রযুক্তি হিসেবে দেখছে থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি।
অভিযানের একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে মঙ্গল গ্রহে নাসা। এখন আর্টেমিস মিশনের প্রতি সংস্থাটির মূল ফোকাস রয়েছে। অর্ধশতাব্দী পরে মানুষকে চাঁদের বুকে ফিরিয়ে নেয়া যেখানে নাসার লক্ষ্য। এর মধ্যেই আর্টেমিস-১ মিশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে ও আগামী বছর আর্টেমিস-২ মিশন পরিচালনার কথা রয়েছে।