সম্প্রতি বাংলাদেশ বডিবিল্ডিং ফেডারেশনের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে পুরস্কার নেওয়ার পর তাতে লাথি মেরে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছেন বডিবিল্ডার জাহিদ হাসান শুভ। ২৩ ডিসেম্বর রাতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের শেখ কামাল মিলনায়তনে পুরস্কারে লাথি মারার সেই ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ওই প্রতিযোগিতায় ১১ জন বিচারক প্যানেলের ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রূপা জেতেন জাহিদ হাসান শুভ।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে রীতিমতো। বাংলাদেশ শরীর গঠন ফেডারেশন এই ঘটনার প্রেক্ষিতে জরুরি সভা আয়োজন করে। সেই সভায় জাহিদ হাসান শুভকে আজীবন বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত এসেছে। ফেডারেশনটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এমনটিই জানিয়েছে।
এ বিষয়ে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘তার এমন কর্মকাণ্ডে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন অডিটোরিয়ামের অন্য শরীরগঠনবিদরাও। আমাদের প্রতিযোগিতা চলাকালীন শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছে জাহিদ হাসান। ফলে খেলাধুলায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আমরা তাকে আজীবন নিষিদ্ধ করেছি।’
শুক্রবারের ঘটনার জবাব দিয়েছেন বডিবিল্ডার জাহিদ হাসান শুভ। চারবারের বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন এবারও আশা করেছিলেন চ্যাম্পিয়ন হবেন। কিন্তু সেই না পাওয়ার হতাশা তাকে গ্রাস করেছিলো। বডিবিল্ডার জাহিদ হাসান শুভ বলেন, আমি যখন গিফট নিয়ে যাচ্ছিলাম তখন আমি নজরুল স্যারকে বললাম যে, স্যার আমার একটু মাইকটা লাগবে আমি কথা বলব। উনি আমাকে কুকুরের মতো দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়া শুরু করলেন।
তবে ক্ষমাও চেয়েছেন অ্যাথলেট হিসেবে এমন অখেলোয়াড়সুলভ আচরণের জন্য। জাহিদ হাসান শুভ বলেন, আমি ক্ষমাপ্রার্থী বা এখনই আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। কারণ একজন অ্যাথলেট হিসেবে এমন কাণ্ড আমার করা উচিত হয় নাই।
নিজেকে সেরা দাবি করে তার অভিযোগ বডিবিল্ডিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামের আত্মীয়কে অন্যায়ভাবে জিতিয়ে দেয়ার। ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের সঙ্গে একটি ভিডিওতে এসে শুভ বলেন, ‘পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আমাকে ইচ্ছা করে দ্বিতীয় বানানো হয়েছে। যাকে প্রথম হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে তার শরীরের গঠন এবং আমার শরীরের গঠন দেখলে যে কেউ বুঝতে পারবেন এটি একটি পাতানো অনুষ্ঠান ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ বডিবিল্ডিং ফেডারেশনের কাউকে অসম্মান করিনি। বরং আমি দুর্নীতিকে লাথি মেরেছি। কারণ আমার সঙ্গে যা হয়েছে তা দুর্নীতি। দুর্নীতির কারণে এরকম অনেক ছেলে তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারেনি। এজন্য আমি সাহস নিয়ে এর বিরুদ্ধে কথা বলছি।’
নিষিদ্ধ হবার আগে শুভ জানিয়েছিলেন, ফেডারেশনের কাছ থেকে ন্যায়বিচার না পেলে মানববন্ধন করবেন তিনি। শুভ জানিয়েছেন, ‘একটা ছেলের ক্যারিয়ার নিয়ে ফেডারেশন খেলতে পারে না। একটা ছেলের লাইফ নিয়ে তারা খেলতে পারে না। আমি প্রয়োজনে মানববন্ধন করবো। আমি ন্যায় চাই। টাকা পয়সা কিছু চাই না। আমি আমার প্রতি ন্যায়বিচার চাই।’