সব প্রস্তুতি নিয়েও শেষ পর্যন্ত বিশ্ব জুনিয়র দাবায় খেলা হচ্ছে না বাংলাদেশের। ইতালির দূতাবাস বাংলাদেশ দলকে ভিসা দেয়নি। ১১–২৩ অক্টোবর ইতালির সার্দিনিয়া শহরে হওয়ার কথা ফিদের তালিকাভুক্ত অনূর্ধ্ব–২০ এই টুর্নামেন্ট।
বাংলাদেশ থেকে ভিসার আবেদন করা হয়েছিল দুজন ছেলে ও পাঁচজন মেয়ে দাবাড়ুর। কিন্তু ভিসা দেওয়া হয়নি কাউকেই। শুধু তাই নয়, ভিসার আবেদন করে এবার ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা হয়েছে বলে জানালেন বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সদস্য ও টিম লিডার মাহমুদা চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘দূতাবাসে আমরা সব কাগজপত্রই জমা দিয়েছিলাম। বিস্তারিত জানিয়ে বিশ্ব দাবা সংস্থা ফিদে থেকে চিঠিও দেওয়া হয় দূতাবাসে। সেই চিঠির কোনো গুরুত্বই তারা দেয়নি।’
শেষমেশ ঢাকায় ইতালির রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করেন মাহমুদা। তাতেও নিরাশ হতে হয়েছে তাঁকে। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রদূত আমার সঙ্গে ঠিকভাবে কথাও বলতে চাননি। সাফ বলে দিয়েছেন, বাংলাদেশিরা ইতালি গেলে আর ফিরে আসে না। কাজেই বাংলাদেশের এ দাবা দলকে ভিসা দেওয়া হবে না। আর কোনো কাগজপত্র বা কেউ সুপারিশ করলেও কাজ হবে না। ভিসা দেবে না পণ করেছে তারা। জীবনে কখনো এমন অভিজ্ঞতা হয়নি।’
২০১৯ সালে সর্বশেষ বিশ্ব জুনিয়র দাবা হয়েছিল দিল্লিতে। মাহমুদা সেবারও কর্মকর্তা হিসেবে গিয়েছিলেন দলের সঙ্গে। দাবা দল নিয়ে অনেক দেশে যাওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে মাহমুদা বলেন, ‘এর আগে আমরা ইউরোপ, আমেরিকাসহ অনেক দেশে দল নিয়ে গিয়েছি। কোথাও সমস্যা হয়নি। বরং সব ক্ষেত্রে সম্মানের সঙ্গে দ্রুত ভিসা পেয়েছি। বাংলাদেশের প্রতি একটা ভ্রান্ত ধারণা থেকে ইতালি আমাদের ভিসা দেয়নি, যা দুঃখজনক। বর্তমানে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–১৬ দাবা দল অলিম্পিয়াডে খেলছে আজারবাইজানে। তাদেরও ভিসা পেতে কোনো সমস্যা হয়নি।’
এবার বিশ্ব জুনিয়র দাবায় যেতে চাওয়া সাত খেলোয়াড়ের দুজনের খরচ দেওয়ার কথা ছিল ফেডারেশনের। বাকিরা নিজ দল বা পৃষ্ঠপোষকের মাধ্যমে খরচ জোগাড় করেন। রোম থেকে ভেন্যুতে যেতে বিমানের অফেরতযোগ্য টিকিটও কাটা হয়ে গিয়েছিল। টিকিট কাটা হয় ঢাকা থেকে ইতালিরও। সঙ্গে ভিসা ফিসহ আনুষঙ্গিক খরচ তো আছেই।
ইতালি দূতাবাস ভিসা না দেওয়ায় খেলোয়াড়দের প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক দাবা বিচারক হারুনুর রশিদ।
তিনি বলেন, ‘এটি ছিল আন্তর্জাতিক দাবা সংস্থা ফিদের তালিকাভুক্ত টুর্নামেন্ট। একটা দেশ যখন কোনো টুর্নামেন্টের আয়োজন করে, তখন ভিসার ব্যাপারটা তারাই নিশ্চিত করে। কিন্তু ইতালির আয়োজকেরা সেটা করতে পারল না। গত মাসে ১৭–১৮ তারিখ থেকে জমা দেওয়া হয় খেলোয়াড়দের ভিসার আবেদন। দূতাবাস একেক দিন একেকজনের ভিসার আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে। এখনো একজনের পাসপোর্ট আছে দূতাবাসে। তবে তারা বলে দিয়েছে কাউকেই ভিসা দেবে না।’
সূত্র : প্রথম আলো